ঘুমিয়ে ছিলেন গেটম্যান, খোলা ছিল রেলক্রসিংয়ের গেট!

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জয়পুরহাটে বাস-ট্রেন সংঘর্ষে নিহত
জয়পুরহাটে বাস-ট্রেন সংঘর্ষ। ছবি : সংগৃহীত

কোনো ট্রেন এলে রেলক্রসিংয়ের গেট লাগিয়ে দেয়া ছিল তার দায়িত্ব। কিন্তু তিনি সেই দায়িত্ব পালন না করে ঘুমিয়ে পড়েন। আর এতেই জয়পুরহাট সদরের পুরানপৈল রেলগেটে প্রাণ হারালেন ১২ জন। গুরুতর আহত আরও চারজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সালাম কবির ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, দুর্ঘটনার সময় রেলক্রসিংয়ের গেট খোলা ছিল। এ সময় ঘুমিয়ে ছিলেন গেটম্যান। তবে গেটম্যানের দায়িত্বে কে ছিলেন সেটা তিনি জানাতে পারেননি।

এসপি জানান, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি হবে। কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রতক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, জয়পুরহাট থেকে ছেড়ে আসা বাঁধন নামের একটি যাত্রীবাহী বাস হিলি স্থলবন্দরের দিকে যাচ্ছিল। সকাল ৭টার দিকে পুরানাপৈল রেলগেইট অতিক্রম করার সময় দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে আসা রাজশাহীগামী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন সজোরে এটিকে ধাক্কা দেয়। ট্রেনটি বাসটিকে রেললাইন ধরে ছেঁচড়িয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে নিয়ে যায়।

বাসে থাকা ১০ জন যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন, আহত হন আরও ছয়জন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান আরও দুজন।

নিহতদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- বাসচালক সদর উপজেলার হারাইল গ্রামের মামুনুর রশিদ, হিচমী গ্রামের মানিকের ছেলে রমজান, পাঁচবিবি উপজেলার আটুল গ্রামের সরোয়ার হোসেন, আরিফুর রহমান রাব্বি, আক্কেলপুর উপজেলার চক বিলা গ্রামের দুদু কাজীর ছেলে সাজু মিয়া এবং নওগাঁর রানী নগর উপজেলার বিজয়কান্দি গ্রামের বাবু।

আহত তিনজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- পাঁচবিবি উপজেলার ফারুখ হোসেন, একই উপজেলার সিরাজুল ইসলামের ছেলে জিয়া, টাঙ্গাইলের মাটিকাটা গ্রামের শুকুর আলীর জুলহাস।

ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি রাজশাহীতে যাচ্ছিল। পাঁচবিবি থেকে ছেড়ে আসা বাসটি জয়পুরহাটে যাওয়ার পথে পুরানাপৈল রেলগেটে উঠে পড়ে। এতে ট্রেনটি ওই বাসকে ধাক্কা দিয়ে অনেক দূরে নিয়ে যায়। বাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।’

নিহতদের মরদেহ জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের অবস্থা গুরুতর থাকায় তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জেলা প্রশাসকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দুর্ঘটনার পর ওই রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। রেলকর্মীরা যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন।

শেয়ার করুন