করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে আগে অনলাইনে নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালুর পরিকল্পনা করছে সরকার। এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য দিয়ে এই নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। সেই নিবন্ধনের ক্ষেত্রেও বয়স ও পেশা ভেদে অগ্রাধিকার তালিকা করা হবে। খবর বিবিসি বাংলার।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. তাহমিনা শিরিন বলেন, কোভিড-১৯ টিকা বিতরণের ব্যাপারে একটি জাতীয় পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী এখন কাজ করা হচ্ছে।
তিনি জানান, করোনাভাইরাসের টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে আগে অনলাইন নিবন্ধনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে কবে ও কীভাবে নিবন্ধনের কাজটি হবে সে বিষয়ে এখনো আলোচনা চলছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিবন্ধনের কাজে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই কর্মসূচি ও আইসিটি বিভাগ সহযোগিতা করবে।
টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ বুথ স্থাপন করার কথা রয়েছে এই পরিকল্পনায়। জেলা বা উপজেলার হাসপাতাল, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের কার্যালয় কোভিড-১৯ টিকার বুথ হিসাবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা কোভিড-১৯ কমিটি নাগরিকদের পেশা, বয়স ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় রেখে একটি অগ্রাধিকার তালিকা করবে। সেই তালিকা অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ, পাসপোর্ট অনুযায়ী তাদের নাম নিবন্ধন করা হবে। পেশাজীবীদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্রও দিতে হবে।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির মতো করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার সময়ও একটি কার্ড ব্যবহার করা হবে বলে পরিকল্পনায় রয়েছে। সেই কার্ডে টিকা গ্রহণকারী ব্যক্তির নাম, পরিচয়, পেশা, জন্মতারিখ, ঠিকানা ইত্যাদির পাশাপাশি তার যেসব শারীরিক রোগ বা অসুস্থতা রয়েছে, তারও বিবরণ থাকবে। এই কার্ডে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের জন্য পৃথক রং ব্যবহার করা হবে।
বাংলাদেশে কবে আসবে টিকা
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আশা প্রকাশ করে বলেছেন, জানুয়ারি মাসের প্রথমদিকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা আসতে পারে।
তবে বেক্সিমকোর কর্মকর্তারা এর আগে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালের জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনাভাইরাসের এই টিকাটি বাংলাদেশ পাবে বলে আশা করছে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ টিকা কেনা জন্য বাংলাদেশের বেক্সিমকো এবং ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। সরকার বিনামূল্যে এসব টিকা বিতরণ করবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, বেক্সিমকো এবং ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে একটি চুক্তির অধীনে তারা যে পরিমাণ করোনাভাইরাসের টিকা কিনেছেন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে তারা যে টিকা পাবার আশা করছেন তার পরিমাণ হবে সব মিলিয়ে চার কোটি ৯০ লাখ ডোজ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তিন কোটি ডোজ টিকা সরকার সরাসরি নিয়ে আসছে। এছাড়া জনসংখ্যার ২০ শতাংশকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা টিকা দেবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মন্ত্রী জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে টিকা দেবে সেটার জন্য হয়তো কিছুটা সময় লাগতে পারে।
ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা, এমএইচআরএ বলছে,করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ৯৫ শতাংশ সক্ষম ফাইজার/বায়োএনটেকের টিকাটি এখন ব্যবহারের জন্য নিরাপদ।