পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে চলমান পরিবহন ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে সিলেট বিভাগ। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বিভাগের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। পরিবহের ধর্মঘটের কারণে যেতে না পারায় দূর গন্তব্যের অনেকেই আটকা পড়েছেন। অন্যদিকে পণ্য পরিবহনেও দেখা দিয়েছে সমস্যা।
৭২ ঘণ্টার টানা ধর্মঘটের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবারও দূরপাল্লার বাস-ট্রাক চলাচল করেনি। ফলে সিলেটের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ আন্তঃজেলা সড়ক যোগাযোগ ভেঙে পড়েছে। এ অবস্থায় ট্রেনই একমাত্র ভরসা হওয়ায় এতে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। অনেকের পক্ষে ট্রেন ভ্রমণ সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রী ও আটকেপড়া লোকজন অসহায় হয়ে পড়েছেন।
সিলেট নগরীতে চলাচলকারীরা রিকশা ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে যাতায়াত করছেন। এজন্য তাদেরকে বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিনের ধর্মঘটে নামে ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ, বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও পাথর ব্যবসায়ী মালিক ঐক্য পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার ধর্মঘটের তৃতীয় দিন চলছে।
এছাড়া সিএনজিচালিত অটোরিকশায় গ্রিল সংযোজনের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ কয়েকটি দাবিতে গত সোমবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে নেমেছিল সিএনজি-অটোরিকশা মালিক ঐক্য পরিষদ। গতকাল থেকে আবারো ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে নেমেছে সংগঠনটি।
ধর্মঘটের কারণে বৃহস্পতিবার সকালে কদমতলী ও কুমারগাঁও বাস টার্মিনাল থেকে কোনো পরিবহন ছেড়ে যায়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। বিশেষ করে কর্মজীবী বা জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষেরা হেঁটে অথবা বাড়তি খরচ করে মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
বন্ধ রয়েছে পণ্য পরিবহনও। এর ফলে সিলেট প্রায় অচল এবং সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে, রেল ও আকাশপথ স্বাভাবিক রয়েছে। তবে মানুষের ভীড় বাড়ায় টিকেট পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে পাথর উত্তোলনের মতো পরিবেশবিনাশী কাজের অনুমতি আদায় করতে চাচ্ছে সুবিধাভোগীরা। তারা এ ব্যাপারে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ ও সিলেট জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল বলেন, ‘পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় সিলেটের ট্রাক মালিকরা গভীর সংকটে পড়েছেন। এ ছাড়া জাফলং ও গোয়াইনঘাট সড়কে বাস-অটোরিকশার যাত্রীও অনেক কমে গেছে। ফলে সবাই ক্ষুব্ধ। তাই পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে সব পরিবহনের শ্রমিক-মালিকরা সম্পৃক্ত হয়েছেন।’