যুক্তরাষ্ট্রে হাসপাতালে পড়ে আছে কোটি কোটি টিকা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

করোনার ভ্যাকসিন
করোনার ভ্যাকসিন। ছবি : ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে হাসপাতালে ও বিভিন্ন স্থানে অব্যবহৃত পড়ে রয়েছে কোটি কোটি ডোজ ভ্যাকসিন। টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর এক সপ্তাহেরও বেশি পার হলেও খুব কম সংখ্যক মার্কিনিই ভ্যাকসিন নিয়েছে।

ফলে চলতি মাসের মধ্যে দুই কোটি নাগরিককে টিকাদানের সরকারি টার্গেট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বুধবার পর্যন্ত মাত্র ১০ লাখ মানুষকে ফাইজার-বায়োএনটেক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে।

এই সময়ের মধ্যে যে গতিতে টিকা দেয়ার লক্ষ্য ছিল তা পূরণ হয়নি বলে স্বীকার করেছেন কর্মকর্তারা। খবর রয়টার্স ও এএফপির।

যুক্তরাষ্ট্রে শীতে নতুন করে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এই ভাইরাসের সংক্রমণে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে তিন লাখ ২০ হাজারের কিছু বেশি মানুষ।

এ বছর দেশটিতে যেসব রোগে বেশি মানুষ মারা গেছে, সেগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে যাওয়ার পথে রয়েছে করোনা। সংক্রমণ ও মৃত্যু কমাতে চলতি মাসের শুরুর দিকে ফাইজারের ভ্যাকসিন অনুমোদনের পর ১৩ ডিসেম্বর ‘অপারেশন ওয়ার স্পিড’ নামে ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু করা হয়।

চলমান কর্মসূচির মধ্যে অনুমোদন দেয়া হয় মডার্নার ভ্যাকসিনও। মার্কিন রোগ ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের মতে, ফাইজার ও মডার্নার মিলে এখন পর্যন্ত ৯৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন রাজ্যে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। তবে সিংহভাগই হাসপাতাল ও টিকাদান কেন্দ্রগুলোর ফ্রিজেই পড়ে আছে। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই দুই কোটি মার্কিনিকে ভ্যাকসিন দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। বছর শেষ হতে সামনে আর মাত্র ৮ দিন বাকি আছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বড়দিনসহ প্রতিদিন প্রায় ২০ লাখ মানুষকে টিকা দিতে হবে। এদিকে চলতি সপ্তাহে আরও মডার্নার প্রায় ৫৯ লাখ ডোজ ও ফাইজারের আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করা হবে।

ভ্যাকসিন কর্মসূচি অপারেশন ওয়ার স্পিডের প্রধান উপদেষ্টা মোনসেফ স্লাউয়ি বলেছেন, চলতি মাসে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেটি সম্ভবত পূরণ করা সম্ভব হবে না। তিনি জানান, নানা কারণেই বিলম্ব ঘটছে।

তবে আগামী মার্চের মধ্যে ১০ কোটি মানুষকে ও পরবর্তী তিন মাসে আরও ১০ কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী তিনি। মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) পরিচালক রবার্ট রেডফিল্ড বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে গত ১৪ ডিসেম্বর এ দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে।

এটি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। তবে আমরা স্বীকার করছি, আমাদের সামনের পথ চ্যালেঞ্জের।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ টিকার সরবরাহ সীমিত। আসছে সপ্তাহ ও মাসগুলোয় এ সরবরাহ বাড়বে।

খবরে বলা হয়, গত সপ্তাহে ফাইজার-বায়োএনটেকের প্রায় ৩০ লাখ টিকা আনা হয়েছে। এ সপ্তাহে ফাইজারের আরও ২০ লাখ ও মডার্নার ৬০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের।

যুক্তরাষ্ট্রে টিকা ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত কর্মসূচি ‘অপারেশন ওয়ার স্পিডের’ প্রধান উপদেষ্টা মোনসেফ স্লাউয়ি বলেছেন, চলতি মাসে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেটি সম্ভবত পূরণ করা সম্ভব হবে না।

কেননা, নানা কারণেই বিলম্ব ঘটছে। তবে আগামী মার্চের মধ্যে ১০ কোটি মানুষকে ও পরবর্তী তিন মাসে আরও ১০ কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী তিনি। অবশ্য এত অল্প সময়ে এত সংখ্যক মানুষকে টিকা দেয়ার এ আশাবাদ কতটুকু ফলপ্রসূ হবে, সে ব্যাপারে অনেক বিশেষজ্ঞই সন্দিহান।

শেয়ার করুন