চীনের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি হতে চলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের। এর প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পড়বে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সাত বছর ধরে আলোচনার পর মঙ্গলবার অবশেষে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং চীন সমঝোতায় পৌঁছেছে। দুই পক্ষের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তির খসড়া তৈরি হয়েছে। সব ঠিক থাকলে বুধবার তাতে সই করতে পারে দুই পক্ষ।
এই চুক্তির ফলে ইউরোপে চীন যেমন একাধিক ক্ষেত্রে বাণিজ্য বাড়াতে পারবে, তেমন চীনেও ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানি বাজার তৈরির সুযোগ পাবে। তবে চীন শেষ পর্যন্ত কতটা ছাড় দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ। খবর ডয়চে ভেলের
গোটা বিশ্বের মতোইউরোপেও চীনের একাধিক সংস্থা ব্যবসা করে। ইউরোপে চীনের বাজারও যথেষ্ট। কিন্তু এখনো পর্যন্ত চীনের বাজার উন্মুক্ত নয়। বিদেশি সংস্থাকে সেই অর্থে চীনে বাণিজ্য করতে দেওয়া হয় না। এই নিয়েই প্রায় সাত বছর ধরে চীনের সঙ্গে আলোচনা চলছিল ইইউর।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বক্তব্য ছিল, ইউরোপে চীনকে বাণিজ্য চালিয়ে যেতে হলে ইউরোপের বিভিন্ন দেশকেও চীনে ব্যবসার সুযোগ করে দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে চীন এই প্রস্তাবে সহমত ছিল না। তবে শেষ পর্যন্ত বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে চীনের বাজার খুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। রিয়েল এস্টেট, ম্যানুফ্যাকচারিং এবং ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসে ইউরোপ চীনের কাছে সমান অধিকার চেয়েছে। অর্থাৎ, চীনের সংস্থা যে সুবিধা পায়, ইউরোপের সংস্থাকেও সেই সুযোগ করে দিতে হবে।
অন্যদিকে, চীনও এনার্জিসহ একাধিক বিষয়ে ইউরোপের কাছে বিশেষ সুবিধা চেয়েছে। অর্থনীতিবিদদের একাংশের বক্তব্য, শেষ পর্যন্ত এই চুক্তিতে লাভবান হবে চীন। কারণ, ইউরোপে আরো বেশি বাণিজ্যের সুযোগ পাবে তারা। ইউরোপের ক্ষেত্রে চীন বাজার পুরোপুরি খুলবে না। চীনের সংস্থা ছাড়া এখনো ইউরোপের সংস্থা গুলি সরাসরি চীনে ব্যবসা করতে পারবে না। তবে চুক্তির সম্পূর্ণ খসড়া না দেখা পর্যন্ত বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে না।
কূটনীতিবিদদের একাংশের বক্তব্য, চুক্তিটি যতটা না আর্থিক, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক। ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। জো বাইডেনের আমলে অ্যামেরিকা যাতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করে, তার ভূমিকা তৈরি হলো এই চুক্তিতে। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক অ্যামেরিকার উপর প্রভাব ফেলবে।