বাংলা গানের যুবরাজ খ্যাত গায়ক আসিফ আকবর গানের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও বেশ সক্রিয়। ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে নিয়মিতই ফেসবুকে ভক্তদের আপডেট দেন তিনি। স্ট্যাটাস লিখে দেন তার ব্যক্তিগত নানা বিষয়ের আপডেটও।
২০১৮ সালের ৪ জুন সন্ধ্যায় গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিন তেজগাঁও থানায় আসিফের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সে মামলায় কারাগারেও যেতে হয় আসিফকে। এবার এ গায়কের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন আরেক সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যানসি। মামলার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে আপডেট জানাচ্ছেন আসিফ।
শনিবার এক স্ট্যাটাসে মামলার বিষয়ে বলতে গিয়ে ন্যান্সির কণ্ঠকে বাংলাদেশের সম্পদ উল্লেখ করে বর্তামনে ন্যান্সির কর্মকাণ্ডের বিষয়ে উল্লেখ করে তাকে মানসিক চিকিৎসা নিতে বললেন আসিফ।
স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে আসিফ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঝুড়ি ভর্তি বিষাক্ত সাপ নিয়ে ঘুরে ঘুরে এক জীবন পার করেছি, সাপের মনে নাই আমার হাতেও বীণ আছে। এসবে আমি আর পাত্তা দেইনা। আর আমার যা বলার তা সব স্ট্যাটাসে লিখে দিয়েছি। মামলার জায়গায় মামলা চলুক সমস্যা নাই। ন্যান্সীর দ্রুত সুস্থ্যতা কামনা করি, অনেক শুভকামনা তার পরিবারের জন্য, যদি ভাল লাগে প্রয়োজনে আরও মামলা সে দিতে পারে আমার কোনো আপত্তি নেই।
দুই বছর আগের বিষয়টি সামনে এনে ন্যান্সি কেনো মামলা করলো সে প্রশ্ন রেখে আসিফ আকবর ফেসবুকে লেখেন, সাজানো মামলায় জেলে যাওয়ার পর দৃশ্যপটে হঠাৎ করেই চলে আসে সুগায়িকা ন্যান্সী। ছয়দিন জেলে ছিলাম, এ ছয়দিন প্রেসে ন্যান্সী আমার সম্বন্ধে যা তা বলেছে। অথচ তার সাথে আমার কখনোই কোন বিরোধ হয়নি। আমাকে বলা হয় ন্যান্সীর বিরুদ্ধে মামলায় যেতে, আমি যাইনি। তাকে কারা ব্যবহার করেছে সেটা পরে বুঝতে পেরেছি।একজন গুনী জুনিয়র আর্টিষ্টের এ ধরনের বেয়াদবীতে কষ্ট পেলেও আমি তখন কোন মন্তব্য করিনি। পরবর্তীতে শাহরিয়ার নাজিম জয় এবং সাংবাদিক শেখ মন্জু’র প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ন্যান্সীর আসল মানসিক অবস্থাটা তুলে ধরেছি। সেটা আরো দু’বছর আগের ঘটনা। হঠাৎ করেই ১০/০৭/২০২০ এ ন্যান্সী থানায় জিডি করে যেটা পরবর্তীতে মামলায় রুপান্তরিত হয়। সে মামলা করলে আরো আগেই করতে পারতো, তাহলে দু’বছর পর কেন করলো সেটারও একটা যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছি।
ক্যারিয়ারে নানা সময়ে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি ও শত্রু-মিত্রের মুখোমুখি হতে হয়েচে আসিফকে। বিষয়টি সামনে এনে তিনি লেখেন, ঝুড়ি ভর্তি বিষাক্ত সাপ নিয়ে ঘুরে ঘুরে এক জীবন পার করেছি, সাপের মনে নাই আমার হাতেও বীণ আছে। ০১/০৭/২০২০ সালে আরেক সুবিধাপ্রাপ্ত গায়িকা আমার বিরুদ্ধে মামলার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল, পরে জিডি করে ক্ষান্ত হয়। তিনার স্বামী আবার একজন তিন ব্যান্ডের রেডিও, সাংবাদিক কাম গীতিকার। প্রভাব বিস্তার করে আমাকে হয়রানীর সুযোগ নিয়েছিল, আমি আগে টের পেয়ে তাদের সে চেষ্টায় পানি ঢেলে দিয়েছি। দশদিনের ব্যবধানে দুই গায়িকার মামলা রহস্যময়। তাদের মধ্যে ফেসবুক ভালবাসার উত্তাপ দেখে বুঝে গেছি একজন ব্যর্থ হয়ে আরেকজনকে উষ্কানী দিয়ে মামলা করিয়েছে, তাও আবার ময়মনসিংহে। পুরনো নন ব্র্যান্ডেড খয়রাতি গীতিকারের মামলার এজাহার এবং গায়িকাদের মামলার বক্তব্য হুবহু। তারমানে তারা একটা চক্র, যারা আমার পিছনে লেগে আছে। সেই তিন ব্যান্ডের রেডিও সাংবাদিক গীতিকার সারাজীবন আমার কাছ থেকে পত্রিকা আর ফিল্মের গানের মাধ্যমে নানান সুবিধা নিয়েছে। ন্যান্সীর ফেসবুকের লাইভে সেই রেডিও আবার বেজে উঠেছে। তিনি ন্যান্সীর লাইভের প্রশংসা করে মন্তব্যও করেছেন কমেন্ট বক্সে, আমি আরো ক্লিয়ার হয়ে গেছি তাদের যোগসূত্র নিয়ে। তবে আমার কপাল ভাল ডিভোর্স কিংবা যৌন হয়রানী মামলার আসামী হতে হয়নি।
ন্যান্সির বিষয়ে আসিফ আরও লেখেন, মামলার পর ন্যান্সী তার ফেসবুক লাইভে আবারো দু’রকম কথা বলেছে। একবার বলে আমার বউকে চেনেই না, আবার বলে ফোনে কথা হয়েছে, তবে দ্বিতীয়টা সঠিক। ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ন্যান্সী স্পেশালাইজড ল্যাব এইডের ৫৫৫ নম্বর কেবিনে এডমিট ছিলো। খবর পেয়ে আমি রাত এগারোটায় বেগমকে দ্রুত পাঠাই ন্যান্সীর খবরাখবর রাখতে, তখন হাসপাতালে ন্যান্সীর দ্বিতীয় স্বামী নাজিমও ছিল। বেগমের সাথে ন্যান্সীর অনেক দিন কথা হয়েছে, আমি আদর করতাম বিধায় বেগমকে ওর খবর রাখার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। সে ক্যাশ তিন লাখ টাকা আমার কাছে কাছে লোন চায়, পরবর্তীতে দ্রুত ফেরতও দিয়ে দেয়। আমার সেজো ভাবী এবং ছোট ভাইয়ের বউ টাকা নেয়ার সময় সামনে ছিল। তারা দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। ন্যান্সীর মা মরহুম জোৎস্না হকের সাথেই আমার কথা হতো বেশী, রাজনৈতিক প্রোগ্রামগুলোয় সে মা’র সাথেই যেত। ন্যান্সীর প্রথম স্বামী সৌরভের সাভারের বাসায় সম্ভবত তার মেয়ের জন্মদিনের দাওয়াত খেতে গেছি উনার ব্যাপক অনুরোধেই। ডুয়েট এ্যালবাম হওয়ার সময় এবং পরেও তার দ্বিতীয় স্বামীসহ আমার অফিসে প্রায়ই আসতো, ছবিও তোলা আছে। হয়তো অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধের সাইড এফেক্টে ন্যান্সীর লংটাইম মেমোরী লস হয়েছে, ইদানীং সে সবকিছু ভুলে যাচ্ছে। স্বাক্ষীসাবুদ সব প্রস্তুত আছে, প্রয়োজনে ফেসবুক লাইভে তাদের হাজির করবো। ন্যান্সীকে আমার মুখোমুখী দাঁড় করিয়ে দিয়েছে পুরনো বস্তাপঁচা দূর্গন্ধময় নন ব্র্যান্ডেড হারামীগুলো, সঙ্গে কিছু সুবিধাপ্রাপ্ত সাংবাদিকও আছে। যদিও সেই সিন্ডিকেট পরে গুঁড়িয়ে দিয়েছি। ঝাড়ীবাজী করলেও ন্যান্সী এখন ত্রিশ হাজার টাকায় গান গায় সেই সাইন করা দলিলও আছে। আশা করি ন্যান্সী ঐ হারামীদের বলয় থেকে বেরিয়ে আসবে। তার কন্ঠ বাংলাদেশের সম্পদ। প্রয়োজনে ভাল ডাক্তার দেখিয়ে মানসিক ট্রিটমেন্ট করুক এটাই চাওয়া। এসব লিখতে চাইনি, আত্মপক্ষ সমর্থন না করলে হুতাশে ব্যস্ত পাবলিক আবার আমাকেই দোষী ভাববে। আরও বিস্তারিত প্রয়োজনে পরে জানাবো, মামলার জায়গায় মামলা চলুক সমস্যা নাই। ন্যান্সীর দ্রুত সুস্থ্যতা কামনা করি, অনেক শুভকামনা তার পরিবারের জন্য, যদি ভাল লাগে প্রয়োজনে আরও মামলা সে দিতে পারে, আপত্তি নেই।