সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্যসহ ৫০ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. হুমায়ুন কবীরের আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এসএম মুনীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রায়ে সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ রিপন ও আরিফ নামে মোট তিনজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া আব্দুল কাদের নামে এক আসামির ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। রায়ে সর্বনিম্ন সাজা দেয়া হয়েছে চার বছর।
বৃহস্পতিবার সকালেই এ মামলায় জেলহাজতে থাকা ৩৪ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে তোলা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলদি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে দেখে যশোরে ফরছিলেন। এ সময় কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে রাস্তার ওপর জেলা বিএনপির সভাপতি ও তৎকালীন এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের নির্দেশে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা দলীয় অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস রাস্তার ওপর আড়াআড়ি থামিয়ে গাড়িবহরে হামলা চালান।
হামলায় তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে এক ডজন দলীয় নেতাকর্মী আহত হন। এ ঘটনায় থানায় মামলা না নেয়ায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদী হয়ে যুবদল নেতা আশরাফ হোসেন, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি বিভিন্ন আদালত ঘুরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর এজাহার হিসেবে গণ্য করা হয়। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে এসটিসি ২০৭/১৫, এসটিসি ২০৮/১৫ দু’টি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২য় আদালতে বিচারাধীন।
পেনালকোর্ডের মামলাটি (টিআর-১৫১/১৫) সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে বিচারাধীন। মামলায় ১৬ জন আসামি পলাতক রয়েছেন। গত ২৭ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষে কাঠগোড়ায় থাকা ৩৪ জনকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. হুমায়ুন কবীর।