বছরের দ্বিতীয়ার্ধেই আসতে পারে করোনার নতুন ধরনরোধী ভ্যাকসিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

করোনার নতুন প্রজাতি
করোনার নতুন প্রজাতি। ছবি : ইন্টারনেট

চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধেই করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন মোকাবিলায় সক্ষম ভ্যাকসিন বাজারে আসতে পারে বলে জানিয়েছে ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকা। ব্রিটিশ-সুইডিশ প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, নতুন ধরন শনাক্তের পরপরই তারা এ নিয়ে কাজ শুরু করেছিল, আগামী ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যেই এর সুফল পাওয়া যেতে পারে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে করোনারোধী ভ্যাকসিন তৈরি করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। ভাইরাসটির স্বাভাবিক ধরনের বিরুদ্ধে ভালো কার্যকারিতা দেখানোয় বৈশ্বিক মহামারি নির্মূলে ভ্যাকসিনটি নিয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠে বিশ্ব।

তবে সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া করোনার একটি ধরনের বিরুদ্ধে একেবারেই সামান্য সুরক্ষা দেখিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন। এ ঘটনার পর ভ্যাকসিনটি ব্যবহার স্থগিতও করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার।

আফ্রিকার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে শনাক্ত আরেকটি ধরন পুরোনোগুলোর তুলনায় বেশি সংক্রামক ও প্রাণঘাতী বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকরা। তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন ধরনগুলো মোকাবিলায় সক্ষম ভ্যাকসিন পাওয়ার ব্যাপারে আশার বাণী শুনিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

প্রতিষ্ঠানটির বায়োফার্মাসিউটিক্যাল গবেষণার প্রধান মেনি প্যাঙ্গালোস বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ধরনগুলো নিয়ে কাজ আজকে শুরু হয়নি, এটি শুরু হয়েছে কয়েক সপ্তাহ বা মাস আগে। নতুন ধরনগুলোর জন্য পরবর্তী প্রজন্মের ভ্যাকসিন নিয়ে আমরা আগামী বসন্তেই (মার্চ থেকে মে) ক্লিনিকে থাকার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।

প্যাঙ্গালোস জানান, তিনি আশা করছেন, আগামী শরতেই (সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর) নতুন ধরনরোধী ভ্যাকসিন জনসাধারণের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হতে পারে।

জানা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া করোনা ভাইরাসের নতুন ধরনের বিপরীতে মাত্র ১০ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন। দেশটিতে পরিচালিত ছোট পরিসরের ট্রায়ালে এমন ‘হতাশাজনক’ ফলাফল এসেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

দ্য গার্ডিয়ানের তথ্যমতে, দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রায়ালে প্রায় দুই হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং এর ফলাফলে দেখা গেছে, ভ্যাকসিনটি করোনার নতুন ধরনের ক্ষেত্রে মৃদু ও মধ্যম সংক্রমণের বিরুদ্ধে খুব সামান্যই সুরক্ষা দেয়। অথচ দেশটিতে করোনার ৯০ শতাংশ সংক্রমণের জন্যই নতুন ধরন দায়ী বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। একারণে পরে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ব্যবহার স্থগিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

তবে দেশটিতে ভ্যাকসিন ট্রায়ালে নেতৃত্ব দেওয়া ইউনিভার্সিটি অব দ্য উইটওয়াটার্সর্যান্ডের অধ্যাপক শাবির মাহদি বলেছেন, জনসন অ্যান্ড জনসনের মতো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনও একটি নির্দিষ্ট বয়সী জনগোষ্ঠীর গুরুতর রোগের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করতে পারে।

শেয়ার করুন