বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। তবে বিদায়ী বছরে করোনা মহামারির জন্য অধিকাংশ দেশই রেমিট্যান্সে আগের বছরের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেনি। এক্ষেত্রে অবশ্য ব্যতিক্রম বাংলাদেশ।
প্রবাসী আয়ে শীর্ষে থাকা ১০টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে করোনা মহামারিতে সাতটিরই রেমিট্যান্স কমেছে। তবে এর মধ্যেও রেমিট্যান্স বেড়েছে তিনটি দেশের। সেই তিনটি দেশের একটি হলো বাংলাদেশ। মহামারিকালে অনেক খারাপ খবরের মধ্যে অবশ্যই এটি একটি ভালো সংবাদ।
বিদায়ী বছরে করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে মন্দা গেছে তাতে ভারত-চীনের মতো উন্নয়নশীল দেশও রেমিট্যান্স প্রবাহে মুখ থুবড়ে পড়ে। আর গত বছরে বাংলাদেশের প্রবাসী আয় বেড়েছে আট শতাংশ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ১ হাজার ৮৪০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৯৮৮ কোটি ডলারে।
রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাওয়া বাকি দেশ দুটি হলো- পাকিস্তান ও মেক্সিকো। বিদায়ী বছরে তাদের প্রবাসী আয় বেড়েছে যথাক্রমে চার ও নয় শতাংশ।
দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। তবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের প্রবাসী আয় বৃদ্ধির বিষয়টি সাময়িক বলে মনে করছে তারা।
কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, এ দুই দেশের প্রবাসী শ্রমিকদের অনেকে তাদের চাকরি হারিয়ে নিজেদের জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছেন। উপসাগরীয় দেশগুলোর শ্রমিকদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি ছিল। কারণ, করোনার কারণে তেলের দাম কমে যাওয়া এবং পর্যটন ব্যবসায় ধস নামায় ওই অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনীতি সংকটে পড়েছে।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স বেশি আসার আরেকটি কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, করোনাকালে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকায় বৈধ উপায়ে দেশে টাকা পাঠানোর পরিমাণ বেড়েছে। আবার বৈধভাবে টাকা পাঠালে প্রণোদনার হারও বাড়ানো হয়েছে, যা প্রবাসী শ্রমিকদের বৈধ উপায়ে দেশে টাকা পাঠানোর উৎসাহ বাড়িয়েছে।
দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট মনে করে, এভাবে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির বিষয়টি সাময়িক। ২০২১ সালেই প্রবাসী আয় আবার পড়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের মতে, করোনার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের কারণে চলতি বছরে প্রবাসী আয় সাত শতাংশ কমতে পারে।
এদিকে, বিদায়ী বছরে রেমিট্যান্স কমে যাওয়া উন্নয়নশীল দশ দেশের বাকি সাতটি হলো- ভারত, চীন, ফিলিপাইন, মিসর, নাইজেরিয়া, ভিয়েতনাম ও ইউক্রেন।