আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। আজ শনিবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া ছাড়াও দলীয় গঠনতন্ত্রপরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে কাদের মির্জাকে দল থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে এই সুপারিশ করা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহ ধরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে গুরুতর আহত করেছেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে মিথ্যা, অশালীন ও আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে সংগঠনবিরোধী অশোভনীয় মন্তব্য ও নেতা-কর্মীদের হুমকি দিয়েছেন। এসব অভিযোগে আবদুল কাদের মির্জাকে সংগঠনের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই আবদুল কাদের মির্জা গত বৃহস্পতিবার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দিলে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এর জের ধরে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল অভিযোগ করেন যে, আবদুল কাদের তার ভাই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। এ অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে চরফকিরা ইউনিয়নের চাপরাশিরহাট বাজারে গতকাল শুক্রবার বিকালে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন বাদল।
বাদলের অনুসারীরা চাপরাশিরহাট বাজারে মিছিল করতে গেলে আবদুল কাদের মির্জার সমর্থকদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আবদুল কাদের মির্জা এলে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয় এবং তারা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে সাংবাদিক মুজাক্কিরসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া আহত হন দু’পক্ষের অন্তত ৩০ জন। আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর আজ মির্জা কাদেরকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানায় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ।
বহিষ্কারের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে আবদুল কাদের মির্জার মুঠোফোনে কল করা হলেও না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।