করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় চালান দেশে আনলো শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিটিউক্যালস লিমিটেড। এ নিয়ে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার ৯০ লাখ ডোজ বাংলাদেশে এলো।
মঙ্গলবার প্রথম প্রহর রাত ১২টা ২২ মিনিটে ভারতের স্পাইসজেট এসজি-০০৬৩ ফ্লাইট টিকার ২০ লাখ ডোজের একটি চালান নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। পরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের পাঁচটি বিশেষ ফ্রিজার কাভার্ডভ্যানে ভ্যাকসিন তোলা হয়। বিমানবন্দরে এসময় ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ওষুধ প্রশাসন ও বেক্সিমকোর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাত ২টার দিকে ভাকসিনবাহী বেক্সিমকোর ফ্রিজার ভ্যানগুলো বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের দিকে রওনা দেয়। সেখানে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের কারখানায় ভ্যাকসিনগুলো রাখা হবে বলে জানা গেছে।
সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে বেক্সিমকোকে ৫০ লাখ ডোজ করে ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ টিকা দেয়ার কথা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আবু নাঈম মোহাম্মদ সোহেল গণমাধ্যমকে বলেন, স্পাইস জেটের একটি ফ্লাইটে অন্যান্য মালামালের সঙ্গে টিকার চালানও এসেছে। এই ভ্যাকসিন এখান থেকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ওয়ারহাউজে নেয়া হচ্ছে। সেখান থেকে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়ার পরে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হবে।
এর আগে ভারত সরকারের উপহার দেয়া ২০ লাখ ডোজ করোনার টিকা আসে বাংলাদেশে। আর ২১ জানুয়ারি প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ টিকা।
ভারত থেকে টিকা আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৭ জানুয়ারি করোনার টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ওই দিন ২১ জনকে টিকা দেয়া হয়। পরদিন রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালে ৫৪৬ জনকে পর্যবেক্ষণমূলক টিকা দেয়া হয়েছিল। এরপর গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশব্যাপী গণ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।
দেশে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়েছেন ২৩ লাখ আট হাজার ১৫৭ জন। এদের মধ্যে ১৫ লাখ ১৮ হাজার ৭১৫ জন পুরুষ এবং সাত হাজার ৮৯ হাজার ৪৪২ জন নারী রয়েছেন।
এ পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে টিকা গ্রহণ করেছেন ছয় লাখ ৫৮ হাজার ৭৮০ জন। এরমধ্যে ঢাকা মহানগরীতে তিন লাখ ছয় হাজার ১৮৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে এক লাখ তিন হাজার ৩৩৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে পাঁচ লাখ ২২ হাজার ৪৪৫ জন, রাজশাহী বিভাগে দুই লাখ ৬২ হাজার ৯৩২ জন, রংপুর বিভাগে দুই লাখ ১৪ হাজার ৩৮৫ জন, খুলনা বিভাগে দুই লাখ ৭৪ হাজার ৬৩৭ জন, বরিশাল বিভাগে এক লাখ ১২ হাজার ১৬৮ জন এবং সিলেট বিভাগে এক লাখ ৫৯ হাজার ৪৭৪ জন।
সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা প্রত্যেককে দুটি ডোজ নিতে হবে। প্রথম টিকা গ্রহণের আট সপ্তাহ পর দেয়া হবে দ্বিতীয় ডোজ।