কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা দিকে উপজেলার গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা থেকে মতলবগামী মতলব এক্সপ্রেসের একটি বাসে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় দগ্ধ হয়ে ও বাস থেকে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত হন অন্তত ২১ জন। তাদের ১৪ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে গুরুতর দগ্ধদের মধ্যে রয়েছেন- মামুন, গোলাম হোসেন, হালিমা খাতুন, ফারুক, মুন্সি উদ্দিন, বিশ্বনাথ, বিপ্লব ও সামছুন নাহার। বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
দুর্ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় সাত কিলোমিটারজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এতে আটকে পড়া যাত্রীরা পড়েন দুর্ভোগ।
দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের এডিশনাল এসপি মোল্লা মো. শাহীন বলেন, বাসের গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আহত বেশ কয়েকজন যাত্রীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দু’জনকে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় ছয় জনকে।
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বলেন, আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড অতিক্রমকালে হঠাৎ করেই বাসটিতে আগুন লেগে যায়। এ সময় আতঙ্কিত যাত্রীরা অনেকেই গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়েন। কেউ কেউ দগ্ধ অবস্থায় বের হন। আর ভেতরে আটকা পড়েন শিশুসহ এক ব্যক্তি। তারা দু’জনই আগুনে পুড়ে মারা যান। বাসটিতে অন্তত ৩০ জন যাত্রী ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান। স্থানীয়রাও এতে যোগ দেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর আগুন নেভাতে সক্ষম হন তারা।
রাত ৮টার দিকে কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, বাসে আগুন লাগার পর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। এ পর্যন্ত ২ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। গুরুতর দগ্ধ রয়েছেন বেশ কয়েকজন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। নিহত দু’জনের লাশ দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল ইসলাম খান। তিনি জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসার জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।