এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের আরেক বান্ধবীকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার নাম শুভ্রা রানী ঘোষ। তিনি ওয়াকামা ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান।
সোমবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রণব কুমার জানান, পিকে হালদারের দুর্নীতির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তার বান্ধবী শুভ্রা রানী ঘোষকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুদক কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার তাকে গ্রেপ্তার করেন। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেপ্তার করে দুদক।
গত বছরের ৮ জানুয়ারি প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করে দুদক। মামলার এজাহারে এক হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা পাচারেরও অভিযোগ আনা হয়।
গত ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি পাঁচটি ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকার ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে পিকে হালদারসহ ৩৩ জনকে আসামি করে পাঁচটি মামলা করে দুদক।
পিকে হালদার ছাড়াও এসব মামলায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হাশেম, সাবেক এমডি মো. রাশেদুল হক, নয়জন বোর্ড সদস্য, পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দীসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়।
দুদক সূত্রে জানা যায়, পি কে হালদারের আরও ৩৩ জন সহযোগীর সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারির অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। শিগগির এদের বিরুদ্ধে এই নোটিশ জারি করা হবে।
গত ১৬ মার্চ পিকে হালদারের বান্ধবী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট নাহিদা রুনাই, একই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত এমডি সৈয়দ আবেদ হাসান ও সিনিয়র ম্যানেজার রাফসান রিয়াদ চৌধুরীকে মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে দুদক। পিকে হালদারের সহযোগী ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেমসহ ৪৫ জনের ইমিগ্রেশন বন্ধ চেয়ে ইমিগ্রেশন অথরিটির কাছে পত্র দেয় সংস্থাটি।
২০১৯ সালের শেষদিকে দুদক অবৈধ ক্যাসিনো মালিকদের সম্পদের তদন্ত শুরু করলে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পিকে হালদারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠে আসে। গত বছরের ৮ জানুয়ারি প্রায় ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ টাকার সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। গত বছরের অক্টোবরে পিকে হালদার ভারত হয়ে কানাডায় পালিয়ে যান।