দেশে করোনাভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন অদৃশ্য ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেক মানুষ। আক্রান্তের তালিকাও প্রতিদিন লম্বা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে আরও ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, গত সাড়ে তিন মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। একই সময় ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে আরও ৩ হাজার ৬৭৪ জনের দেহে।
আজ শনিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজার ৬৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করে তিন হাজার ৬৭৪ জনের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ লাখ ৯১ হাজার ৮০৬ জন।
গত একদিনে করোনায় আরও ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৮৬৯ জনে। মারা যাওয়া ৩৯ জনের মধ্যে পুরুষ ২৪ জন এবং নারী ১৫জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৯৭১ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন পাঁচ লাখ ৩৩ হাজার ৯২২ জন। আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ২২ শতাংশ।
২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ঘোষণা আসে। দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তির মৃত্যুর ঘোষণা আসে ১৮ মার্চ।
দেশে সংক্রমণ শুরুর দিকে রোগী শনাক্তের হার কম ছিল। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে নতুন রোগীর পাশাপাশি শনাক্তের হারও কমতে শুরু করেছিল। মাস দুয়েক সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে নতুন রোগী ও শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়। ডিসেম্বর থেকে সংক্রমণ আবার কমতে শুরু করে। তবে চার সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বমুখী।
করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গত ২৭ জানুয়ারি দেশে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এদিন গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।