ফরিদপুরে ভাঙ্গা থানায় হামলা চালিয়েছেন হেফাজতের কর্মী সমর্থকরা। তাদের হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে থানার ফটক। এসময় পুলিশের দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে পুলিশ ৪৫টি সর্টগানের গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে দুপুর থেকেই ফরিদপুরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- এসআই শহীদুল্লাহ (৪৭) ও আবুল কালাম আজাদ (৩৫), এএসআই আজিজুল রহমান (৩৩) এবং কনস্টেবল জয়নাল আবেদিন (৩৫), শাহ জালাল (২৭) ও মতিউর রহমান (৪৩)। তাদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শনিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে জোহরের নামাজের পর ভাঙ্গা থানার সন্নিকটে জামিয়া ইসলামিয়া কাসেমুল উলুম ঈদগাঁ মাদ্রাসা থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। এ মিছিলটি ভাঙ্গা বাজার ঘুরে বিশ্ব রোড এলাকায় যায়। পরে বিশ্বরোড থেকে ফিরে মিছিলটি ভাঙ্গা থানার নিকটে ঈদগাঁ মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হয়। মিছিলকারীরা ওই মাঠ থেকে লাঠি ও কাঠের বাটাম সংগ্রহ করে দুপুর সোয়া ২টার দিকে অন্তত ২৫০ থেকে ৩০০ ব্যক্তি ভাঙ্গা থানায় হামলা করে।
হামলাকারীরা ভাঙ্গার থানার গেট ভাঙচুর করে এবং ভেতরে ঢুকে দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এসময় হামলাকারীরা থানার দিকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইটের টুকরো ছুড়তে শুরু করে। এ হামলা ঠেকাতে দুই এসআই ও এক এ এসআইসহ ৬ পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ ব্যারাক থেকে পুলিশ এসে শর্টগানের ৪৫টি গুলি ছুড়ে ৪০ মিনিট পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান বলেন, এ হামলা পরিকল্পিত। আমরা বিভিন্ন মাদ্রাসায় আগে থেকেই যোগাযোগ করেছিলাম। তারা কথা দিয়েছিলেন তারা কোন ঝামেলা করবেন না। কিন্তু কথার বরখেলাপ করে অতর্কিতে এ হামলা চালানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, ভাঙ্গা বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর গোপালগঞ্জ সফরের পর ভিআইপিরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও এক্সপ্রেসওয়ে দিয়েই ঢাকা ফিরবেন। সেটি পণ্ড করার জন্যই এ ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে পুলিশ মামলা করবে। মামলার পর আমরা সংঘবদ্ধকারীদের পরিচয় প্রকাশ করতে পারব।
এদিকে দুপুর থেকে ফরিদপুরে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। দুই প্লাটুন বিজিবি ঝিনাইদহ মহেশপুর ৫৮ ব্যাটালিয়ন বিজিবির নায়েক সুবেদার মো. হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা ফরিদপুরে এসে পৌঁছায়। ফরিদপুরে এসেই তারা ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।