কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামকে উদ্দেশ করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, আমার জানাজার নামাজ তারা পড়াক আমি তা চাইনি। আর আপনাদের বলে রাখি, কোনো মুসলমানের জানাজা নামাজ পড়াতে কোনো মৌলভীর সাহেবের প্রয়োজন নাই। যে কোনো মুসলমান জানাজার নামাজে দাঁড়িয়ে নিয়ত যদি বাংলায়ও করেন, যদি দোয়া না পারেন, তাহলে নামাজে দাঁড়িয়ে বলেন, আমি এই মাইয়াতের ক্ষমা প্রার্থনার জন্য জানাজার নামাজে দাঁড়ালাম তাহলেও হবে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বললাম এই কথা।
তিনি বলেন, জানাজার নামাজ নিয়ে আপনারা মাথা ঘামাবেন না। এই খানের (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) মোল্লারা নাকি বলেছেন, ছাত্রলীগের জানাজা নাকি পড়াবেন না। এখানে ছাত্রলীগের যারা আছে তাদের ঘাবড়ানোর কিছু নাই। তোমাদের জানাজার নামাজ তোমার বাবা-ভাই বা প্রয়োজন হলে আমি জানাজা পড়াব। সুতরাং তোমরা জানাজা নিয়ে চিন্তা করবে না। কিন্তু আমরা হেফাজতির কাছে যাব না এই কথা নিশ্চিত থাকো। হেফাজতিরা আমাদের কাছে আসে।
আজ সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
তিনি আরও বলেন, অনেকে আমাকে দোষারোপ করার চেষ্টা করছেন। নিজেদের অপারগতা-ব্যর্থতা ঢাকতে তারা এখন আমার ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বললাম,আমি কোনো উস্কানিমূলক কথা বলেনি। কেউ যদি দেখাতে পারেন আমি কোনো কথা উস্কানিমূলক বলেছি, আমি বিচারের সম্মুখীন হতে রাজি আছি।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আমি ৭০ বছর জীবনে বহু হরতাল দেখেছি। হরতালে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা হতে কোনোদিন দেখেনি। অথচ হেফাজতের হরতালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাড়িসহ দলীয় বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা করা হলো। ভূমি অফিসে হামলা করা হলো।
প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূমিদস্যুদের এক সিন্ডিকেট আছে। এই হামলার পেছনে যদি তারাও থেকে থাকে, এর দায় হেফাজতকেই নিতে হবে। অথচ হেফাজত প্রেস কনফারেন্স করে আমার বিচার চেয়েছে, আমাকে গালাগাল করেছে। কিন্তু তদন্ত দাবি করে নাই। এমনকি তারা আমাকে এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করার জন্য তাদের অনুসারীদের লাগিয়ে দিয়েছে। হেফাজতের আকাবরদের কাছে আমার প্রশ্ন হলো তারা কী মাদ্রাসায় তাদের তালেবুল আলেমদের এসব গাালি দেওয়ার শিক্ষা দিচ্ছেন?
তিনি বলেন , এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে তাণ্ডব ঘটানো হয়েছে এর সঙ্গে কারা কার জড়িত তা খুঁজে বের করে দোষীদেরকে আইনের আওয়তায় এনে শাস্তি নিশ্চত করার জন্য আমি এসবের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি এবং এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রশাসনের সাথে আমরা বারবার যোগাযোগ করার পরও কেন তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি এর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন, মুজিবুর রহমান বাবুল, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার, যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভূইয়া প্রমূখ।