চট্টগ্রামের হাটহাজারীর সহিংসতার ঘটনায় হেফাজত ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুফতি হারুন ইজাহারকে ‘মদদদাতা’ দাবি করছে র্যাব। গতকাল বুধবার রাতে তাকে নগরের লালখান বাজার জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে আটকের পর আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে র্যাব বলছে, হারুন ইজাহারকে হাটহাজারীর সব মামলায় আসামি করা হবে। তিনি এই ঘটনার মদদদাতা।
সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেফতার হলেও চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো সংগঠনের একজন কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেফতার হলেন। হাটহাজারী ও পটিয়া থানায় হওয়া মামলায় এই পর্যন্ত ৪০ জন নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল রাতে আটকের পর হারুনকে নগরের পতেঙ্গা র্যাব-৭ কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে র্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল গণমাধ্যমকে বলেন, হাটহাজারী থানা ভবন, ভূমি অফিস, ডাকবাংলোতে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের ঘটনার মদদদাতা ছিলেন হারুন ইজাহার। ঘটনার পর থেকে র্যাব তাকে নজরদারিতে রেখেছে। পরে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এ জন্য হাটহাজারী থানায় হওয়া মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখাতে আদালতে বিকেলে তোলা হবে। মামলাগুলো যেহেতু থানা-পুলিশ তদন্ত করছে তারাই আদালতে আবেদন করবে।
তবে হারুন ইজাহারের আইনজীবী আবদুস সাত্তার দাবি করেন হারুন হাটহাজারী ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তিনি থাকেন নগরের লালখান বাজারে। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে।
মুফতি হারুন ইজহার ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান মুফতি ইজাহারুল ইসলামের ছেলে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর বিরোধী কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত ২৬ মার্চ জুমার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনার জের ধরে হাটহাজারী ও পটিয়ায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে। ৪ হাজার ৩০০ জনকে আসামি করে পটিয়া ও হাটহাজারী থানায় হামলা, ভূমি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও
অগ্নিসংযোগে জড়িত থাকার অভিযোগে করা সন্ত্রাসী বিরোধী আইনের পৃথক সাতটি মামলা হয়। পরে ২২ এপ্রিল হেফাজতের নেতা কর্মীদের আসামি করে পৃথক তিনটি মামলা করে হাটহাজারী থানা-পুলিশ। এর মধ্যে দুই মামলায় বিলুপ্ত কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীকে আসামি করা হয়। তিন মামলায় আসামি করা হয় তিন হাজার জনকে। এর মধ্যে ১৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
হারুন ইজাহার বিস্ফোরক মামলায়ও ২০১৩ সালে গ্রেফতার হন। পরে জামিনে মুক্তি পান। ওই মামলায় তার বাবা মুফতি ইজাহারও আসামি। এটি বিচারাধীন রয়েছে।