ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব: বিচার চেয়ে পদত্যাগ করা সেই হেফাজত নেতা গ্রেফতার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মুফতি আবদুর রহিম কাসেমী
মুফতি আবদুর রহিম কাসেমী। সংগৃহীত ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের চালানো তাণ্ডবের প্রতিবাদ এবং জড়িতদের বিচার চেয়ে পদত্যাগ করা সংগঠনটির জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের ভাদুঘর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

universel cardiac hospital

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. রইছ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের চালানো তাণ্ডবের ঘটনা তদন্ত করে আব্দুর রহিম কাসেমীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এছাড়া ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চালানো তাণ্ডবেও তার সংশ্লিষ্টতা ছিল।

এর আগে হোফাজতে ইসলামের চালানো তাণ্ডবের ঘটনার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের বিচার চেয়ে গত ২৩ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেন কাসেমী।

ওই দিন সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো লিখিত বক্তব্যে আব্দুর রহিম কাসেমী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের ডাকে যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তা নজিরবিহীন ও অমানবিক। দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি কোনোভাবেই ইসলামসম্মত হতে পারে না।

যাদের প্ররোচনায় দেশ ও জনগণের জানমালের এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান কাসেমী।

প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে গিয়ে হেফাজতের ব্যানারে মাদ্রাসার ছাত্ররা গত ২৬ মার্চ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ওই দিন বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে হামলা চালিয়ে জাতির জনকের ম্যুরাল, জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুলিশসুপারের বাসভবন, জেলা জজের বাসভবন, জেলা সিভিল সার্জনের অফিসসহ ভাংচুরসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়।

এ ছাড়াও ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে হরতাল সমর্থকরা শহীদ ধীরেন্দ্রসনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, সুর সম্রাট স্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, আনন্দময়ী কালীবাড়ি মন্দির,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবনসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরীরেত পরিণত করে।

এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৪০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪২৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি সবাই অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী। ৫৭টির মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪টি, সরাইল থানায় ২টি ও আখাউড়া রেলওয়ে থানায় ১টি মামলা হয়।

শেয়ার করুন