ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবের সময় পুলিশের এপিসিতে অগ্নিসংযোগকারী মূলহোতা জাকারিয়া আহমেদ প্রীতমকে গাজীপুর থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ২৮ মার্চ হেফাজতের হরতাল চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড এলাকায় পুলিশের এপিসিতে পেট্রোল দিয়ে অগ্নিসংযোগের মূলহোতা জাকারিয়া আহমেদ প্রীতম সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও পশ্চিমপাড়া মৃত নাছির উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিম আজ শনিবার বিকাল ৪টার দিকে গাজীপুর সদর থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামি জাকারিয়া আহমেদ প্রীতম এপিসিতে অগ্নিসংযোগ পরবর্তীতে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে গাজীপুরে আত্মগোপনে থেকে ভাড়া বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
এপিসি পোড়ানোর ভিডিও ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিশ্বরোড এলাকায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রইস উদ্দিন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাকে পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গাজীপুর সদর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে গিয়ে হেফাজতের ব্যানারে মাদ্রাসার ছাত্ররা গত ২৬ মার্চ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ওই দিন বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে হামলা চালিয়ে জাতির জনকের ম্যুরাল, জেলা প্রশাসকের বাসভবন, পুলিশসুপারের বাসভবন, জেলা জজের বাসভবন, জেলা সিভিল সার্জনের অফিসসহ ভাংচুরসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়।
এ ছাড়াও ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে হরতাল সমর্থকরা শহীদ ধীরেন্দ্রসনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, সুর সম্রাট স্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, আনন্দময়ী কালীবাড়ি মন্দির,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবনসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরীরেত পরিণত করে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৪০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।