পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সারাদেশে কঠোর লকডাউন জারি করেছে সরকার। এর আগে ৩০ জুন পর্যন্ত ৭টি জেলার কঠোর লকডাউন জারি করা হয়।
আজ শুক্রবার রাতে তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব সরকারি বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন শুধু চলাচল করতে পারবে। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কাজ করবে পুলিশ, বিজিবি এবং মোতায়েন থাকতে পারে সেনাবাহিনী।
জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। তবে গণমাধ্যম এর আওতা বহির্ভূত থাকবে। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত আদেশ আগামীকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা হবে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় মারা গেছেন ১০৮ জন, যা এই বছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ৷ আর শনাক্ত হয়েছে পাঁচ হাজার ৮৬৯ জন৷ সংক্রমণের হার ২২.২১ ভাগ।
কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি ইতিমধ্যে ১৪ দিন গোটা দেশ শাটডাউনের সুপারিশ করেছে। জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতি ডা. মো. শহীদুল্লাহ শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, এখন যা পরিস্থিতি তাতে সংক্রমণ ঠেকানো না গেলে যে অবস্থা হবে তা আমরা কল্পনাও করতে পারছি না৷ ভারতের চেয়েও খারাপ হবে৷ তাই আমরা ১৪ দিনের জন্য পুরো দেশ শাটডাউনের সুপারিশ করেছি৷
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ওই মাসের শেষ দিকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। কয়েক মাস কার্যত অচল থাকে গোটা দেশ। পরে সংক্রমণ আস্তে আস্তে কমতে থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া প্রায় সব কিছুতেই বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। চলতি বছরের মার্চ থেকে করোনা পরিস্থিতির আবার অবনতি হতে থাকে। এপ্রিলের শুরুতে সরকার দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। টানা কয়েক সপ্তাহ চলার পর সংক্রমণ কমে আসায় বিধিনিষেধও শিথিল করা হয়।
করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমে এলেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে। সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় সীমান্তবর্তী বেশ কিছু জেলায় বিধিনিষেধ দেয়া হয়। ঢাকার আশপাশের সাত জেলাতেও বিধিনিষেধ চলছে গত মঙ্গলবার থেকে।
এতেও করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হতে থাকায় সারাদেশে শাটডাউনের সুপারিশ করে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার তারা সারাদেশ ১৪ দিনের শাটডাউনের সুপারিশের কথা জানায়। এরপরই সরকার সিদ্ধান্ত নেয় কঠোর লকডাউনের, যা সোমবার থেকে বাস্তবায়ন হবে।