কিশোর গ্যাংয়ের হাতে যেসব অস্ত্র আসছে সেগুলো পার্শ্ববর্তী দেশের সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছে বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন র্যাব। তারা বলছে, এসব অস্ত্র দিয়ে অপরাধের চেয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন বেশি করা হয়। আবার অনেক সময় এসব অস্ত্র দিয়ে অপরাধও হচ্ছে।
আজ সোমবার বিকালে রাজধানীর কারওয়ান র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, অবৈধ এসব অস্ত্রের রুট আমাদের নেই। কিন্তু সীমান্ত দিয়ে দেশে অস্ত্র প্রবেশ করছে। একটা সিন্ডিকেট আছে, সেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব অস্ত্র সংগ্রহ করছে। পরবর্তী সময়ে এসব অস্ত্র দিয়ে অপরাধ করার চেয়ে মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনই বড় একটা কাজ। আবার অনেক সময় এসব অস্ত্র দিয়ে অপরাধও করা হচ্ছে।
এর আগে গত ২৪ মে ঢাকার আশুলিয়ার নাল্লাপাড়া এলাকায় মসজিদের খাদেম নজরুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ ঘটনায় রবিবার দিবাগত রাতে র্যাব-৪ দুজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন- রাকিব হোসেন এবং তার সহযোগী ইমন হোসেন। তাদের কাছ থেকে দুটি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, চাইনিজ কুড়াল, দুটি ফোল্ডিং চাকু, চাপাতি ও ৩০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক জানান, মসজিদের খাদেম নজরুল এক নারীর কাছ দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সেই টাকা দিতে দেরি হওয়ায় দুজনের মধ্যে বিরোধ হয়। এতে খাদেম নজরুলকে ডেকে হুমকি দেয়া হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নজরুল আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগের পর আদালতে মামলা করেন। মামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই নারী আলিম নামে একজনকে দিয়ে নজরুলকে শায়েস্তা করতে ঠিক করেন। পরবর্তী সময়ে আলিম তার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে নজরুলকে কুপিয়ে জখম করে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়। অভিযুক্তরা খাদেমকে কুপিয়ে জখমের পর আত্মগোপনে চলে যায়। কক্সবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকদিন ধরে পালিয়েও বেড়িয়েছিল। এলাকাবাসী দোষীদের গ্রেপ্তারে মানববন্ধন করে। সবশেষ গতরাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান মোজাম্মেল হক।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তার রাকিব ও ইমনের নেতৃত্বে ১০/১২ জনের কিশোর গ্যাং গ্রুপ সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় ইভটিজিং, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, খুনসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। প্রধান অভিযুক্ত আলিমকে গ্রেপ্তারে র্যাব অভিযান চালাচ্ছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘কিশোর বয়স থেকেই তারা দুষ্টু ও দুরন্ত। কিশোর গ্যাং বলে দেশে কোনো আইন নেই। কিশোররা জড়িত থাকে বলে আমরা ‘কিশোর গ্যাং’ বলি। তাদের অনেক সঙ্গী সাথী আছে। তারা কোনো না কোনোভাবে মাদকাসক্ত। কিশোরদের মধ্যে ফিল বেশি কাজ করে, এতে তাদেরকে সহজে মোটিভেট করা যায়। তাই তাদের মাধ্যমে জমি দখল, মাদক ব্যবসা, কাউকে মারধর বা ভাড়াটিয়া মধ্যস্থতাকারী দালাল হিসেবে ব্যবহার করে। এসব কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে আমরা কাজ করছি।