মহামারি করোনায় চিকিৎসাসেবা চাপ সামাল দিতে একযোগে বদলি করা হলো এক হাজারেরও বেশি চিকিৎসককে। কঠোর লকডাউন চলাকালে হঠাৎ এমন বদলি নিয়ে চিকিৎসকদের একটি অংশে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় বদলিকাণ্ডে অদ্ভুত কিছু ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ছয় মাস আগে মারা যাওয়া চিকিৎসকও আছেন বদলির তালিকায়। আবার অবসরে গেছেন এমন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নামও আছে সেখানে। এছাড়া যে প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে গেছেন তাকে আগের প্রতিষ্ঠানে আবার বদলি করা হয়েছে।
বদলির আদেশে এভাবে যাদের নাম এসেছে তারা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। অন্যদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এমন কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন চিকিৎসকরা।
গত রোববার ও সোমবার ৪৮টি প্রজ্ঞাপনে এক হাজার ২৩৯ জন চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষকদের নতুন নতুন কর্মস্থলে সংযুক্তিতে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বদলির আদেশে নাম আছে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জীবেশ কুমার প্রামাণিকের। কিন্তু তিনি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ৬ জানুয়ারি মারা গেছেন।
সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব জাকিয়া পারভীন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ওই চিকিৎসককে বগুড়া ২৫০ শয্যা মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে বদলি করা হয়।
জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
তার করোনায় মারা যাওয়ার বিষয়টি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোহসিন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, এক আদেশে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ থেকে বদলি করা হয় মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন নামের একজনকে। তাকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ থেকে কক্সবাজার জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্তিতে পাঠানো হয়েছে। অথচ তিনি ওই কলেজ থেকে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি অবসরে যান।
কিন্তু কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অনুপম বড়ুয়া জানিয়েছেন, এই নামে তাদের কলেজে কেউ নেই। তিনি এ নামে কাউকে চিনেনও না।
বিষয়টি নিযে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন জানিয়ে যাকে বদলি করা হলো সেই চক্ষু বিশেষজ্ঞ গিয়াস উদ্দিন বললেন, আমার অবসরের কথা হয়তো মন্ত্রণালয় জানত না। তাই হয়তো এমনটা করেছে।
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) থেকে ফেনী জেলা হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে সুজিত কুমার দাশ নামের এক চিকিৎসককের বেলায় ঘটেছে আরও আশ্চর্য ঘটনা। জানা গেছে, তিনি পাঁচ–ছয় বছর আগে চমেক থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চমেক অধ্যক্ষ শাহেনা আকতার। তিনি বলেন, সুজিত দাশ আগে এখানে ছিলেন। এখন এখানে নেই।