করোনার প্রকোপ ঠেকাতে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনার বিস্তার ঘটেছে গ্রাম পর্যায়েও।
ফাইল ছবি

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে এবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সমন্বয়ে গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

শনিবার ‘কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় মাঠ পর্যায়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির করতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ এবং দিকনির্দেশনা প্রদান’ উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

universel cardiac hospital

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ, তথ্যসচিব মো. মকবুল হোসেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে বলা হয়, করোনা প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় মাঠ পর্যায়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিধিদের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করতে হবে।

তৃণমূলে গঠন করা ওই কমিটির কাজের বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, এই কমিটি জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টি, চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান, ভ্যাকসিন প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণ ও সহায়তা প্রদানের জন্য কাজ করবে।

এছাড়া গ্রাম ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গঠন করা কমিটিতে কারা থাকবেন সেসব বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্বাস্থ্য, যুব, কৃষি, আনসার ভিডিপির মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, মসজিদের ইমাম, এনজিও প্রতিনিধি, হাট-বাজার সমিতির নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্টরা অন্তর্ভুক্ত হবেন।

চলতি জুলাই মাসে করোনা সংক্রমণের প্রভাব বেড়েছে বহুগুণ। ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়েন্টের কারণে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হু হু করে। শহরের পাশাপাশি করোনার সংক্রমণ বেড়েছে গ্রামেও। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৮৫ জনের। এছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন আট হাজার ৭৭২ জন। শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুসারে, গত ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত এই দশ দিনেই দেশে আক্রান্ত হয়েছে ৯৬ হাজার ৫৭ জন। আর এই সময়ে করোনায় সারাদেশে মৃত্যুবরণ করেছে এক হাজার ৬৮৬ জন। এই সময়ে প্রতিদিনই সংক্রমিত হয় ৩০ থেকে ৩২ শতাংশ মানুষ।

কোভিড বিস্তার রোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণানলয় তৃণমূল পর্যায়ে গ্রাম এবং ওয়ার্ডে যে কমিটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজল চৌধুরী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এর আগে আমরা এই বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে নির্দেশনা পেয়েছিলাম গত বছর। তখনই আমরা এই ধরনের কমিটি করে কাজ শুরু করেছি।’

চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন কোভিডের প্রভাবে পুরো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে পৌঁছলে নতুনভাবে আমরা কাজ করবো। আমার এখনো বসে নেই। সরকারের সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। জনসচেতনতা বাড়াতে কাজ করছি। সরকার নির্ধারিত সময়ের বাইরে কোনো ধরনের দোকানপাটও খোলা রাখতে দিচ্ছি না।’

শেয়ার করুন