নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জের সেজান সুজ কারখানায় আগুনে ৫২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান, এমডি ও সিইওসহ ৮ জনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
আজ শনিবার বিকেলে শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট ফাহমিদা খানমের আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ।
কোর্ট ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আসামিরা হলেন-সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল হাসেম এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাহেনশাহ আজাদ, আবুল হাসেমের চার ছেলে (গ্রুপের ডিএমডি) হাসিব বিন হাসেম ওরফে সজীব, (পরিচালক) তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম, তানজীম ইব্রাহীম; হাসেম ফুডসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মামুনুর রশিদ এবং সিভিল ইঞ্জনিয়ার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন।
এর আগে রূপগঞ্জের ভুলতা ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
গত ৮ জুলাই বিকেলে ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ঘটনার প্রথম দিন তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হন অর্ধশত শ্রমিক। ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ১৮টি ইউনিট ২০ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর গত ৯ জুলাই সকালে ওই ভবনের চারতলা থেকে ২৬ নারীসহ ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সব মিলিয়ে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ জনে। ২৯ ঘণ্টা পর ৯ জুলাই রাতে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডে নিহদের পরিচয় জানতে এক মাস সময় লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডিএনএ পরীক্ষক মোহাম্মদ মাসুদ রাব্বী সবুজ।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ২৬টি মরদেহের বিপরীতে ৩৫ জন দাবিদারের নমুনা সংগ্রহ করেছি। এখনও সব দাবিদার আসেননি। তারা এলে পর্যায়ক্রমে তাদের নমুনা নেয়া হবে। একইসঙ্গে যাদের নমুনা নেয়া হয়েছে সেগুলো ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। সব মিলিয়ে আশা করা যায় এক মাসের মধ্যে পরিচয়গুলো আমরা শনাক্ত করতে পারব।
অন্যদিকে অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জন নিহতের ঘটনাকে ‘হত্যা’ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, একটা দুর্ঘটনা হয়েছে, একটা হত্যা হয়েছে, অনেকগুলো মানুষ মারা গেছে, মামলা তো হবেই। মামলা হবে তদন্ত হবে, যারা দোষী, যারা সামান্যতম এর সঙ্গে দোষী বা (যাদের) দায়ী করা হবে তাদের বিচার হবে।