করোনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু, শনাক্ত ১০ লাখ ছাড়াল

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের দাফন
ফাইল ছবি

সারাদেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত এক দিনে আরও ২২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগে গত ১১ জুলাই এক দিনে সর্বোচ্চ ২৩০ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়। এদিকে গত এক দিনে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ২৩৬ জন। এতে শনাক্তের সংখ্যা ১০ লাখ পার হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

universel cardiac hospital

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ হাজার ৯৪১টি নমুনা পরীক্ষায় ১২ হাজার ২৩৬ জন শনাক্ত হন, যাতে শনাক্তের হার ২৭.২৩ শতাংশ। এ নিয়ে মোট শনাক্ত ১০ লাখ ৭১ হাজার ৭৭৪ জন। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৫.০০ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ১৪০ জন পুরুষ এবং ৮৬ জন নারী। এ পর্যন্ত পুরুষ মারা গেছেন ১২ হাজার ৫৩ জন ও নারী ৫ হাজার ২২৫ জন।

নতুন মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ৭৪ জন, চট্টগ্রামে ৪২, রাজশাহীতে ২৪, খুলনা ৫২, বরিশালে ৬, সিলেটে ৫, রংপুরে ১৩ এবং ময়মনসিংহে ১০ জন মারা গেছেন।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ১২১ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৪৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৩৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১২ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের ৬ জন, ১১ থেকে ২০ একজন ও শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সী একজন রয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু ১৭ হাজার ২৭৮ জনের।

২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৮ হাজার ৩৯৫ জন এবং এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৯ লাখ ৫ হাজার ৮০৭ জন।

দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। জুলাই মাসে দৈনিক শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের উপরে আছে। মোট গড় হার ১৪ শতাংশের উপরে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা যায়।

বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিধিনিষেধ জারি করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে। এর মধ্যেই আবার ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউন দিয়ে

দ্বিতীয় ধাপে ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে, ১৪ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন শিথিল থাকবে নতুন এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে। এরপর আবার ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউন চলবে।

শেয়ার করুন