আজ বুধবার ত্যাগ আর উৎসর্গের আদর্শে মহিমান্বিত পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলিম জাহানের জন্য খুশির বার্তা নিয়ে বছর ঘুরে আবারও ফিরে এসেছে ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। বাঙালি সমাজে ‘কোরবানির ঈদ’ নামেও পরিচিত মুসলমানদের এই অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব।
এদিন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ে পশু কোরবানি দেবেন।
পবিত্র কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী, চার হাজার বছর আগে আল্লাহর নির্দেশে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু নিজ সন্তান হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু আল্লাহর কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর এই ত্যাগের মনোভাবের কথা স্মরণ করে প্রতিবছর মুসলমানরা কোরবানি করে থাকেন।
জিলহজ মাসের ১০ তারিখ পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হলেও ১০, ১১ ও ১২ তারিখের যে কোনো দিন পশু কোরবানি দেয়া যায়। সে হিসেবে বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবারও কোরবানি করা যাবে।
এবার ঈদ এসেছে এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশ আক্রান্ত। স্বজন হারানোর শোক এখনও তাজা রয়েছে হাজারো পরিবারে।
জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে যারা রাজধানী ঢাকায় থাকেন, বুধবার ঈদ উদযাপনে তাদের অনেকেই পথের ভোগান্তি সয়ে, শত ক্লান্তি গায়ে মেখে ছুটে গেছেন গ্রামের বাড়িতে প্রিয়জনের কাছে। যদিও করোনাভাইরাস আতঙ্কে এবারও কিছুটা ভাটার টান পড়েছে ঈদ আনন্দে।
এবার খোলা ময়দানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামায়াত উদযাপনের কথা থাকলেও আষাঢ়ের বৃষ্টি আর করোনা সংক্রমণের কথা ভেবে জাতীয় ঈদগাহে নেই কোনো আয়োজন। ঈদের জামাত হচ্ছে না ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানেও।
তবে নগরবাসীর কথা ভেবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পাঁচটি ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে।
বায়তুল মোকাররমে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। এই নামাজে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।
দ্বিতীয় জামাত শুরু হবে সকাল ৮টায়। এতে ইমামতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভীকে। সকাল ৯টায় শুরু হবে তৃতীয় জামাত। বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক এই নামাজে ইমামতি করবেন।
সকাল ১০টায় হবে চতুর্থ জামাত। যেখানে ইমামতি করবেন পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহিউদ্দীন কাসেম। পঞ্চম ও সবশেষ জামাতটি অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। এই নামাজে ইমামের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা ওয়ালিয়ূর রহমান খানকে।
পাঁচটি জামাতে কোনো ইমাম অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। এ ছাড়াও রাজধানীর প্রতিটি অলিগলিতে স্থানীয়ভাবে ঈদের নামাজের আয়োজন করা হয়েছে।