গৃহকর্মীকে মারধর ও বাসা থেকে মাদক উদ্ধারের ঘটনায় চিত্রনায়িকা একার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায়। গৃহকর্মী নির্যাতন আইনে প্রথম মামলাটির বাদী একার হাতে মারধরের শিকার হওয়া গৃহকর্মী হাজেরা বেগম। মাদক আইনে অপর মামলাটির বাদী পুলিশ।
আজ শনিবার রাতে মামলা দুটি দায়ের করা হয়। রোববার সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেন হাতিরঝিল থানার ডিউটি অফিসার হারুনুর রশীদ।
৩৫ বছর বয়সী গৃহকর্মী হাজেরা বেগমকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় নায়িকা একাকে রামপুরার পূর্ব উলনে অবস্থিত বন্ধু নিবাস বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। এ সময় সেখান থেকে অর্ধেক বোতল মদ, পাঁচ পিস ইয়াবা ও ৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
তবে মাদক উদ্ধারের ঘটনাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেছেন চিত্রনায়িকা একা। তার দাবি, গৃহকর্মী হাজেরাই তার ঘরে মাদক রেখে তাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। নায়িকা বলেন, মদ-গাঁজা-ইয়াবা তো দূরে থাক, আমি কোনোদিন সিগারেট পর্যন্ত ধরে দেখিনি।
অন্যদিকে, গৃহকর্মী হাজেরা বেগম তার বয়ানে বলেছেন, একার বাসায় প্রায়ই বিভিন্ন মানুষ আসা-যাওয়া করে। কেউ বন্ধু পরিচয়ে, কেউ আবার ভাই পরিচয়ে। তারা সিগারেটের মধ্যে কী যেন ভরে খায়। আমি কোনো দিন সেগুলো জিজ্ঞেস করিনি।
গৃহকর্মীকে হাজেরাকে যেভাবে আহত করেন একা
হাজেরার বয়ান অনুযায়ী, শনিবার দুপুর দুইটার দিকে রামপুরার পূর্ব উলন বন্ধু নিবাসে নিজের বাসায় তাকে সারাদিন কাজ করতে বলেন চিত্রনায়িকা একা। হাজেরা এর উত্তরে বলেন, ‘আমি তো অন্যের বাসায় কাজ করি। আমি একটু পরে এসে কাজ করে দিয়ে যাবো।’
এরপর রেগে গিয়ে হাজেরাকে বকাবকি করেন একা। বলেন, তোমাকে কাজ করে দিয়ে যেতে হবে। কথা না শুনলে বাসা থেকে বের করে দেন তাকে। পরে হাজেরা বলেন, ‘আমি আপনার কাছে যে ৫০০০ টাকা পাব, ওইটা দিয়ে দেন।’ টাকা চাওয়ায় একা ইট দিয়ে হাজেরার হাতে আঘাত করেন।
পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ৯৯৯-এ কল করে পুলিশে খবর দেন। এরপর হাতিরঝিল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শরিফ ঘটনাস্থলে এসে হাজেরাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান এবং প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
আহত গৃহকর্মী হাজেরা বেগমদের গ্রামের বাড়ি শেরপুর সদরের হরিণধরা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের রফিক মিয়ার স্ত্রী। ঢাকায় তিনি রামপুরা টিভি সেন্টারের পেছনে থাকেন। বিভিন্ন বাসায় কাজ করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন।