কোভিড-১৯ সংক্রমণের রেশ কিছুটা নিম্নমুখী হলেও উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এখন আরো বেশি সচেতন না হলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পরিস্থিতি আরো বিপজ্জনক হতে পারে বলে জানাচ্ছেন মার্কিন বিশেষজ্ঞ।
যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষের টিকাদান সম্পন্ন হয়েছে। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও মোটামুটি খোলা। যথাযথ কভিডবিধি মেনে চললেও নিস্তার নেই এই কভিডগ্রাস থেকে। আপাতত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কয়েক মাসের মধ্যে আবার সেই দুর্দিন ফিরে আসতে পারে বলে কার্যত গোটা বিশ্বকেই সতর্ক করেছেন মার্কিন বিশেষজ্ঞ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পরামর্শদাতা তথা সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজ রিসার্চ অ্যান্ড পলিসির পরিচালক মাইকেল অস্টারহোম বলেছেন, দৈনিক সংক্রমণের গ্রাফ আপাতত স্বস্তি দিলেও তাতে উল্লসিত হওয়ার কিছু নেই। বরং আগামী ছয় মাসে মহামারি পরিস্থিতি আরো ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। তাঁর কথায়, ‘এই কোভিড-১৯ আসলে দাবানলের মতো, প্রতিটি মানুষকে না পুড়িয়ে থামবে না।’ অর্থাৎ এই ছয় মাসের মধ্যে হয় সবাই করোনায় আক্রান্ত হবে, না হয় ভ্যাকসিন পেয়ে যাবে—এমনটাই মনে করছেন এই সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ। দুটই হতে পারে। আবার কেউ কেউ একাধিকবার করোনায় আক্রান্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা ব্যক্ত করেন অস্টারহোম।
যথাযথ কোভিডবিধি মেনে চললেও নিস্তার নেই এই কোভিডগ্রাস থেকে? অস্টারহোমের মতে, স্বাস্থ্যবিধি পালন এবং টিকাদানের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু একটা ঢেউ থেকে আরেকটা ঢেউ আসার মাঝে সার্স কোভ-২ যেভাবে রূপ বদলাচ্ছে, সেটাই ভাবনার। করোনার যেসব ভেরিয়েন্ট টিকাকে রুখতে পারছে না, গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া সেই সব প্রজাতি নিয়েই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মার্কিন বিশেষজ্ঞ। টিকাদানে গতি এলেও সদ্যোজাত বা দুরারোগ্য কোনো রোগে আক্রান্তদের নিয়েই বেশি ভয় পাচ্ছেন তিনি।
অস্টারহোমের কথায়, ‘সংক্রমণের ঢেউ নামবে, আবার চড়বে। বিশ্বজুড়ে একটা বড় অংশের মানুষের যেহেতু টিকাদান হয়নি। তাই গণপরিবহন, ক্লাসরুম কিংবা অফিস-আদালতে ফের গণসংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। বলাই বাহুল্য, এর জেরে অর্থনীতিও আরো একবার জোর ধাক্কা খাবে।’
এই মহামারির তাহলে শেষ কোথায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৩০ বছরের ইতিহাস ধরলে পাঁচ বছর পর্যন্তও স্থায়ী হয়েছে গ্লোবাল ফ্লু। করোনাও কি সেদিকেই এগোচ্ছে? ডেনমার্কের এপিডেমিওলজিস্ট লোন সিমোনসেনের দাবি, ‘কিছুই বলা যাচ্ছে না। কারণ, এই ভাইরাস একেবারেই নতুন, নিত্যনতুন ভেরিয়েন্ট তৈরি করছে।’