সুনামগঞ্জে হঠাৎ বাস ধর্মঘট: ভোগান্তিতে মানুষ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

পরিবহন ধর্মঘট
পরিবহন ধর্মঘট। ফাইল ছবি

পরিবহন থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে সুনামগঞ্জ-সিলেট বাইপাস সড়কে চলছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। এতে সকাল থেকেই পথে পথে ভোগান্তিতে পড়েছেন গন্তব্যে ছুটে চলা সাধারণ মানুষ।

আজ রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন এ ধর্মঘট পালন করছে।

সকালে সরজমিনে দেখা যায়, হঠাৎ করে ধর্মঘট ডাকায় গন্তব্যমুখী মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। সকালে বিভিন্ন উপজেলা থেকে জেলা শহরের সুনামগঞ্জ বাস টার্মিনালে এসে সাধারণ যাত্রীরা টিকেট কাউন্টারগুলো বন্ধ দেখতে পায়। বাস কাউন্টারের সামনে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে গন্তব্যে যাওয়া জন্য অপেক্ষা করছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাউন্টারগুলোর সামনে বাড়ছে যাত্রীদের ভিড়। কিন্তু কখন ছাড়বে বাস, নির্দিষ্টভাবে কেউ তা বলতে পারছে না।

জেলার তাহিরপুর উপজেলা থেকে আসা রাসেল আশরাফ নামের এক যাত্রী বলেন, আমি তাহিরপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য সুনামগঞ্জের বাস কাউন্টারে অগ্রিম টাকা দিয়ে টিকেট কেটে রেখেছিলাম। কিন্তু শনিবার রাত ১২টায় কাউন্টার থেকে হঠাৎ ফোন দিয়ে আমাকে জানানো হলো- বাস চলবে না, টিকেটের টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য। অথচ আমার ঢাকায় যাওয়া খুব জুরুরি। আমি সকাল থেকে টার্মিনালের সামনে অপেক্ষা করছি। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করে যাত্রীদের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেয়া হোক।

হবিগঞ্জ থেকে আসা এক যাত্রী বলেন, একটা প্রজেক্টের কাজের জন্য সুনামগঞ্জ আসছি, আজ বাড়ি যাওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎ শুনলাম যানবাহন চলবে না। এটা আসলেই দুঃখজনক। সুনামগঞ্জ থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে হবিগঞ্জ যাওয়ার এখন কোনো মাধ্যমই নেই। এ সমস্যার দ্রুত সমাধানে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

সুনামগঞ্জ-সিলেট রুটের বাসচালক জয়নাল মিয়া বলেন, সিলেট বাইপাস সড়কে একটি চক্র আমাদের কাছ থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করছে। চাঁদা না দিলে মারধর করে। আমরা বিষয়টি শ্রমিক নেতাদের জানালে তারা পুলিশকে জানান। কিন্তু কোনো প্রতিকার না পেয়ে আমরা ধর্মঘট ডেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি।

সুনামগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুখ আহমদ বলেন, সিলেট বাইপাস সড়কে একটি চক্র আন্তঃজেলায় বাস থেকে চাঁদাবাজি করছে এবং অনেক সময় যাত্রীদের মোবাইল জোর করে ছিনিয়ে নিচ্ছে। আমরা বিষয়টি সুনামগঞ্জ পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, সিলেট পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। উল্টো ওই চাঁদাবাজ চক্রটি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। তারা একটু এদিক-ওদিক হলেই চালকদের মারধর করছে। বাসচালক ও সাধারণ যাত্রীরা এ ধরনের চাঁদাবাজি থেকে রেহাই চান। এজন্যই আমরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দূরপাল্লার কোনো যানবাহনের চাকা ঘুরবে না।

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, সিলেটের পথে চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। আমরা সুনামগঞ্জের শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা নিজেরা বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন