আজ রোববার দেশে প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে । দুপুর ১২টা থেকে সারাদেশে একযোগে ২৬ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন এক লাখ ৩১ হাজার ৯০১ পরীক্ষার্থী।
ভর্তি পরীক্ষা কমিটি সূত্রে জানা যায়, এবার বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগসহ তিন ইউনিটে রয়েছে ২২ হাজার ১৩ আসন। আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন দুই লাখ ৩২ হাজার ৪৫৫ পরীক্ষার্থী। হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে প্রতিযোগিতা করবেন ১১ জন। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে প্রায় ১২ হাজার সিটের বিপরীতে ২৬টি আসনে এক লাখ ৩১ হাজার ৯০১ জন পরীক্ষায় বসছেন।
এ ছাড়া আগামী ২৪ অক্টোবর ‘বি’ ইউনিটে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার আসনের বিপরীতে ৬৭ হাজার ১১৭ এবং ‘সি’ ইউনিটে প্রায় সাড়ে তিন হাজার আসনের বিপরীতে ৩৩ হাজার ৪৩৬ শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।
পরীক্ষার বিষয়সমূহ
জিএসটির গুচ্ছ পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়া হবে। যেখানে বিজ্ঞান বিভাগের ক্ষেত্রে বাংলায় ১০, ইংরেজিতে ১০, রসায়ন ২০, পদার্থবিজ্ঞান ২০, বাকি ৪০ নম্বর থাকবে আইসিটিতে। মানবিক বিভাগের ক্ষেত্রে বাংলায় ৪০, ইংরেজিতে ৩৫ ও আইসিটিতে ২৫ নম্বর এবং বাণিজ্য বিভাগের ক্ষেত্রে হিসাববিজ্ঞানে ২৫, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনায় ২৫, বাংলায় ১৩, ইংরেজিতে ১২ ও আইসিটিতে ২৫ নম্বর থাকবে। পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর।
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়।
‘এ’ ইউনিটের আসন বিন্যাস
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৭১০, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩১৬৩, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০৯১৫, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০০০, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০০০, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১৫৩৯, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২০০, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭১০৮, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৪৯৩, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০০০, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০৪৫, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০০, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০৮৫, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০২৫, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৫১৩, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৪৬২, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫০৫, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৬৮৮, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০০০, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০০০, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬০০, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮০, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৯১২, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৪৫৮, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০০ এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০০ পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন।
এ ছাড়া ‘বি’ এবং ‘সি’ ইউনিটে ২২ কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবার গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিভাগ পরিবর্তনের জন্য আলাদা পরীক্ষা নেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ নিজ সার্কুলার ও নিয়ম অনুসারে বিভাগ পরিবর্তন করে ভর্তির সুযোগ দেবে।
পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজকদের মন্তব্য
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা শতভাগ প্রস্তুত পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। আগেই যথাযথ নিরাপত্তার সঙ্গে সব পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র, উত্তরপত্র ও উপস্থিতি তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছি। এতে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও পুলিশ সহায়তা করছে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশ্নপত্রের ট্রাংকে জিপিএস ট্র্যাকিং সিস্টেম লাগানো হয়েছে, যাতে প্রশ্নপত্র নিরাপদ থাকে।
শিগগিরই ফল প্রকাশ করা হবে উল্লেখ করে শাবি উপাচার্য বলেন, পরীক্ষা পরবর্তী ২-৩ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশের চিন্তাভাবনা রয়েছে। র্যাংকের ভিত্তিতে ফল প্রকাশ না করে ১০০ নম্বরের মধ্যে পরীক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর (স্কোর) প্রকাশ করা হবে। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পৃথক সার্কুলার ও শর্তের ভিত্তিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের বিষয়ে ভর্তির আবেদন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
বিভাগ পরিবর্তন নিয়ে শাবি উপাচার্য বলেন, বিভাগ পরিবর্তনে কোনও পরীক্ষা হচ্ছে না। তবে এক্ষেত্রে ২০টি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরবর্তীতে নীতিমালা প্রণয়ন করবে। শর্ত মেনে শিক্ষার্থীরা বিভাগ পরিবর্তন করে পছন্দের বিষয়ে পড়তে পারবে।