নন্দিত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

হাসান আজিজুল হক
হাসান আজিজুল হক। ফাইল ছবি

স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকজয়ী নন্দিত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৮৩ বছর। গত একমাস ধরে অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন হাসান আজিজুল হক। বাসায় রেখেই তার চিকিৎসা চলছিল। 

হাসান আজিজুল হকের ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইমতিয়াজ হাসানের বরাত দিয়ে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাজ্জাদ বকুল। তিনি বলেন, হাসান আজিজুল হক দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন। রাত সোয়া ৯টার দিকে তিনি আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছেন।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন কন্যা এবং এক ছেলেকে রেখে গেছেন। কন্যারা বিবাহিত। তার ছেলে ইমতিয়াজ হাসান মৌলি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম টিপু জানান, আগামীকাল শহীদ মিনারে তার (হাসান আজিজুল হকের) মরদেহে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে। বাদ জোহর রাবির কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোরস্থানে দাফন করা হবে।

হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ থেকে ১৯৭৩ পর্যন্ত তিনি রাজশাহী সিটি কলেজ, সিরাজগঞ্জ কলেজ, খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ এবং সরকারি ব্রজলাল কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত একনাগাড়ে ৩১ বছর অধ্যাপনা করেন এই সাহিত্যিক।

২০০৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদে মনোনীত হন এবং দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের আগস্টে হাসান আজিজুল হক বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘের সভাপতি নির্বাচিত হন।

আগুনপাখি (উপন্যাস), আত্মজা ও একটি করবী গাছ (গল্পগ্রন্থ), একাত্তর: করতলে ছিন্নমাথাসহ (প্রবন্ধ) অসংখ্য জনপ্রিয় বইয়ের লেখক এ সাহিত্যিক বিভিন্ন সময়ে নানা পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। এর মধ্যে ১৯৭০ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে এবং ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।

এই অসামান্য গদ্যশিল্পী তার সার্বজৈবনিক সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ‘সাহিত্যরত্ন’ উপাধি লাভ করেন।

শেয়ার করুন