টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের সংসদ সদস্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ‘মত ও পথ’ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
আজ মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শোকবার্তায় মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক মানুষ ও প্রতিশ্রুতিশীল রাজনীতিবিদ। দেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসার টানেই তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। একাব্বর হোসেনের মৃত্যুতে দেশ হারালো তার এক শ্রেষ্ঠ সন্তানকে এবং টাঙ্গাইলবাসী হারালো তাদের একজন খুব আপনজনকে।
উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন আজ মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)।
কিডনিজনিত অসুস্থতার কারণে একাব্বর হোসেন নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতেন। গত ১৯ অক্টোবর মঙ্গলবার ধানমন্ডির আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে গেলে সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। পরে তাকে নেওয়া হয় আইসিইউতে। ২০ অক্টোবর বুধবার সিটিস্ক্যান রিপোর্টে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন বলে চিকিৎসক জানান।
মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একাব্বর হোসেন ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি জাতীয় সংসদে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
একাব্বর হোসেন এমপি ১৯৫৬ সালের ১২ জুলাই মির্জাপুর উপজেলার পোস্টকামুরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আলহাজ ওয়াজউদ্দিন এবং মাতার রেজিয়া বেগম। তিনি ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস সম্মান ও ১৯৭৮ সালে এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবন থেকে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ১৯৭৩ সালে সরকারি তিতুমীর কলেজে পড়াকালীন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৭৮ সালে একই হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি মির্জাপুর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেডের তিনবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে তিনি মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে একাব্বর হোসেন এক ছেলে দুই মেয়ের জনক।