বৌদ্ধধর্মের অন্যতম প্রভাবশালী ভিক্ষু থিচ নহট হান ভিয়েতনামে মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। তিনি কবি ও শান্তি কর্মীও ছিলেন। এ বৌদ্ধ ভিক্ষুর জেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। খবর আলজাজিরার।
প্রভাবশালী এ বৌদ্ধ ভিক্ষু ৪০ বছরের মতো নির্বাসিত ছিলেন। ধীরে ধীরে তিনি তার কার্যক্রমের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিদের একজন হয়ে ওঠেন।
দ্য প্লাম ভিলেজ কমিউনিটি অব এনগেজড বুদ্ধিজম জানায়, ভিয়েতনামের হুয়ে শহরে তু হিউ প্যাগোডায় ধ্যানের গুরু ‘শান্তিপূর্ণভাবে মারা গেছেন’। জায়গাটি ভিয়েতনামের বৌদ্ধদের প্রাণকেন্দ্র ও সেখান থেকে ধ্যানের গুরুর আধ্যাত্মিক যাত্রা শুরু হয়েছিল।
ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানানোর পর থিচ ৪০ বছর ফ্রান্সে নির্বাসনে ছিলেন। ধীরে ধীরে তিনি দালাই লামার পর বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা হিসেবে উঠে আসেন।
এ বৌদ্ধ ভিক্ষুর জন্ম ১৯২৬ সালে। তিনি মননশীলতা ও ধ্যান নিয়ে একশ’র বেশি বই লিখেছেন।
থিচ নহট সাতটি ভাষা জানতেন এবং ১৯৬০ এর দশকের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন। এর পর ১৯৬৩ সালে তিনি ভিয়েতনামে ফিরে এসে যুদ্ধের বিরোধীতা করেন।
ভিয়েতনাম যুদ্ধ ১৯৬০ এর দশকে যখন চরমে তখন থিচ নহট যুক্তরাষ্ট্রের অধিকারকর্মী মার্টিন লুথার কিংয়ের সঙ্গে দেশটিতে দেখা করেন এবং তাকে এ যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য রাজি করান। কিন্তু মার্টিনের সঙ্গে দেখা করার কারণে দক্ষিণ ভিয়েতনামের সরকার তার দেশে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
২০১৪ সালে স্ট্রোকের পর থেকে বৌদ্ধ এ ভিক্ষুর শরীরের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। এর পর ২০১৮ সালে তাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়। তিনি তার জীবনের শেষ সময়গুলো তু হিউ প্যাগোডায় কাটিয়েছিলেন। যদিও সেখানে তাকে সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখতেন।