ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অসুস্থ অবস্থায় গেস্টরুমে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. আকতারুল ইসলাম। তিনি ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বিজয় একাত্তর হলের মেঘলা ভবনে থাকেন তিনি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আকতারুল ইসলাম বুধবার রাতে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছিরকে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগপত্রে তিনি জানান, কয়েকদিন ধরে তিনি অসুস্থ। তিনি শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত ছিলেন। কারণ এক সপ্তাহ আগে তার বাবা ব্রেইন স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার বাবা একজন দিনমজুর। অসুস্থতার মধ্যেও তাকে রাত দশটার দিকে গেস্টরুমে ডাকা হয়। তখন অভিযুক্তরা বলেন, ‘এ তুই গতকাল গেস্ট রুমে ছিলি না কেন। তখন ভুক্তভোগী বলেন, ভাই আমি খুব অসুস্থ কয়েকদিন থেকে। এছাড়া আমার বাবা স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ’ গেস্টরুমে ডেকে তাকে ভয় দেখানো হয়। বৈদ্যুতিক বাল্বের দিকে ১ ঘণ্টা তাকিয়ে থাকতে বলা হয়। ১০ মিনিট তাকানোর পর তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করান তার সহপাঠীরা।
আকতারুল বলেন, আমি খুব ভয়ে আছি। এখন যদি আমাকে হল থেকে বের করে দেয়। আমাকে বলতে নিষেধ করেছে তারা (অভিযুক্তরা)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে ১০টায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় গায়ে শীতের পোশাকও ছিল না। এমনকি তার ভাইয়ের গায়েও শীতের পোশাক ছিল না। এমনই অর্থনৈতিক অসচ্ছলতায় রয়েছেন আকতার।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ২০১৯-২০ সেশনের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুজ্জামান রাজু, মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শুভ, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদ কাজল, সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়ামিন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম, লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম রোহান।
তারা সবাই হল শাখা ছাত্রলীগে পদপ্রত্যাশী আবু ইউনুস ও রবিউল ইসলাম রানার অনুসারী। তারা দুজনেই ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী।
এ বিষয়ে বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির বলেন, ঘটনাটা আমি শুনেছি। এটা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হবে। ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।