সরকার প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর যে গুরুত্ব দিয়েছিল, তাতে সফল বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন শহরকেন্দ্রিক উন্নয়ন নয়, তৃণমূল থেকে উন্নয়নটা করি। আধুনিক প্রযুক্তির ওপরে যে গুরুত্ব দিয়েছিলাম সেখানে আমরা যথেষ্ট সফল। আজকে মানুষ যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন, বলতে গেলে এই প্রযুক্তির মাধ্যমেই পৃথিবীটা সবার হাতের মুঠোয় চলে আসছে। বিশ্বকে জানার সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশ আর অন্ধকারে পড়ে থাকছে না বরং বাংলাদেশের মেধাবী ছেলেমেয়েরাও বিশ্বের কাছে নিজেদেরকে আরও উপস্থাপন করতে পারছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মুজিববর্ষ জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রকাশিত গ্রন্থসমূহের প্রকাশনা উৎসব, বঙ্গবন্ধু স্কলার বৃত্তি প্রদান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুইজের চূড়ান্ত পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার লক্ষ্য ছিল ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে আসা। এরপরে আমরা ২০৪১ সালের লক্ষ্য নিয়েছি। আজকের নতুন প্রজন্ম ৪১ সালের সৈনিক হবে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। উন্নয়নশীল দেশ থেকে ধাপে ধাপে উন্নত দেশে উন্নীত হবে এবং সেটা করা খুব কঠিন কাজ নয়।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ একটি সোনার দেশ করতে চেয়েছিলেন। সেই সোনার দেশ গড়তে তিনি সোনার মানুষ চেয়েছিলেন। সোনার মানুষ এখন তৈরি হচ্ছে।
সরকার প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করতে পারা আমাদের জন্য অনেক বড় একটা পাওয়া। সেটা আমরা করতে পেরেছি সেজন্য আমি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। ভোট দিয়ে তারা নির্বাচিত করেছিল বলেই আজকে আমরা সরকার গঠন করতে পেরেছি এবং এ বিরল সুযোগ পেয়েছি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, পঁচাত্তরের পর বঙ্গবন্ধু নামটা মুছে ফেলা হয়েছিল। আমাদের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের যে ইতিহাস- সব ইতিহাসই কিন্তু পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল প্রায় ২১ বছর। আমাদের কয়টা জেনারেশন আছে, যারা হয়তো কিছু জানতেই পারেনি। আজকে লেখা বা প্রকাশনার মাধ্যমে অনেক কিছু আজকের প্রজন্ম জানতে পারবে। এটাই সবচেয়ে বড় কথা।
দেশে শিক্ষা গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এটা আমাদের শিখিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কারণ তিনি শিক্ষাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ৭০ এর নির্বাচনী ইশতেহার যখন তিনি ঘোষণা দেন তখন ভাষণে তিনি এ কথা বলেছিলেন, শিক্ষায় যে অর্থ ব্যয় হয় সেটা হচ্ছে বিনিয়োগ।
বৃত্তি ও বিশেষ গবেষণা বৃত্তি চালু রাখার ঘোষণা দেন চারবারের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা একটা বরাদ্দ রেখে দেব, যারা গবেষণা করে কিছু আবিষ্কার করতে পারবে তাদেরকে আমরা দেব। সেটা আমরা করব।
বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে গান, কবিতা ও বিভিন্ন সাহিত্যের বিষয় তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো নেতা আছে কি না আমি জানিনা, যার নামে এত গান, এত কবিতা রচনা হয়েছে। আমি বলব রচনাগুলো- গল্প, সাহিত্য থেকে শুরু করে বিজ্ঞান থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রেই কিন্তু বিস্তৃত এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে মানুষ আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করে। শুধু গ্রহণ করলেই হবে না, পরবর্তী প্রজন্ম সেই আদর্শ নিয়ে এই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু স্কলার বৃত্তি প্রদান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুইজের চূড়ান্ত পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ১৩ জনকে বঙ্গবন্ধু স্কলার বৃত্তি ও ১০০ জনকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুইজের বিজয়ী হিসেবে পুরষ্কার তুলে দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন।