২০০৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকার সময়ে ভারতীয় কোম্পানি টাটার তিন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ তারেক রহমানের ‘অতি লোভে’র কারণে বাংলাদেশ বঞ্চিত হয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
আজ সোমবার তাঁর নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে সজীব ওয়াজেদ জয় এ সংক্রান্ত একটি ভিডিওবার্তা পোস্ট করে এসব কথা বলেন। বিএনপি সরকারের ওই সময়কালে টাটা ছাড়া আরও অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে মুখ ফেরায় বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীপুত্র।
২০০৫ সাল ৮ মে তৎকালীন জ্বালানি উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান টাটা বাংলাদেশে ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে টাটার কাছে তারেক-মামুনের ঘুষ দাবি করার ঘটনা ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দপ্তর পর্যন্ত গড়ালে এক পর্যায়ে টাটা গ্রুপ নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পটি বাতিল করে।
ভিডিওবার্তায় সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, কেন টাটা কোম্পানি সেই সময় বাংলাদেশে তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে অতি আগ্রহী হওয়া সত্ত্বেও শেষ মূহুর্তে সরে আসে? কেন এদেশের যুবসমাজ তাদের কর্মসংস্থানের বিশাল সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়? তারেক রহমান ও তার সঙ্গী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের অনিয়ন্ত্রিত লোভের খেসারত বাংলাদেশকে দিতে হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা জয় জানান, ২০০৫ সালের ৮ মে সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান ঘোষণা করেন, টাটা বাংলাদেশে তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত, যা অতীতের সব বিদেশি বিনিয়োগকে ছাড়িয়ে যেত।
তিনি বলেন, পরিকল্পনা মোতাবেক ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি ২৫ বছরের নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের বিনিময়ে এদেশের রাসায়নিক সার ও ইস্পাত শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী ছিল। শুধু তাই নয়, এই বিনিয়োগ চুক্তি সফল হলে বাংলাদেশ টাটার কাছ থেকে ১০ শতাংশ শেয়ারেরও অংশীদার হত।
- আরও পড়ুন >> খারকিভে রুশ হামলায় ভারতীয় শিক্ষার্থী নিহত
জয় আরও বলেন, সেসময় টাটার পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় তারেক রহমান এবং তার ডানহাতখ্যাত গিয়াসউদ্দিন আল মামুন ও সিলভার সেলিম রতন টাটার সঙ্গে আলাদাভাবে একান্ত বৈঠক দাবি করেন। এমন দাবির প্রেক্ষিতে তখন বাকি পরিচালকরা উঠে যান। পরে রতন টাটার সামনে ঝেঁড়ে কাশেন গিয়াসউদ্দিন মামুন। এসময় তিনি রতন টাটাকে ১০ শতাংশ কমিশনের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এ প্রস্তাব শোনা মাত্র টাটার মালিক তা প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু কমিশনের দাবিতে অনড় থাকেন তারেক। এক পর্যায়ে রতন টাটা গিয়াসউদ্দিনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের থাকা বিভিন্ন ব্যাংকে লেনদেনের হদিস পান।
ভিডিও বার্তায় জয় জানান, ওই একান্ত বৈঠকে গিয়াসউদ্দিন প্রথম দফায় ২০০ কোটি ও পরে জাতীয় নির্বাচন বাবদ আরও ১০০ কোটি টাকা দাবি করেন। ওই বৈঠকের পর রতন টাটা ভারতের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তা বরাবর এক চিঠিতে তারেক ও গিয়াস উদ্দিন মামুনের এই ঘুষ চাওয়ার ঘটনা ফাঁস করে দেন।