জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবে বাংলাদেশ কেন ভোটদানে বিরত ছিল এবং পরে মানিবক সংকট নিরসনে ইউক্রেনের পক্ষে অন্য একটি প্রস্তাবে কেন ভোট দিয়েছে সংসদে ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা।
বুধবার (৩০ মার্চ) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘে ভোটের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান আসলে কী ছিল জানতে চান।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদানে বিরত থাকার বিষয় ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, জাতিসংঘে যখন প্রথম প্রস্তাবটিতে আমরা দেখলাম সেখানে কোনো মানবাধিকারের কথা নেই, যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা নেই। একটা দেশের বিরুদ্ধে ভোট, সেটা হল রাশিয়া। এই যুদ্ধের পেছনে উসকানি ছিল, সে কারণে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ভোট দেয়নি।
আর ইউক্রেনের পক্ষে ভোটদানের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রস্তাবে মানবাধিকারের বিষয় ছিল। যুদ্ধের ফলে ইউক্রেইনের মানুষের যে কষ্ট হচ্ছে, ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে সবাই কষ্ট পাচ্ছে। যেহেতু মানবাধিকারের বিষয়টি রয়েছে, সেজন্য আমরা ভোট দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা দেশের বিরুদ্ধে ভোট, সেটা হল রাশিয়া। তখন আমি বললাম, না, এখানে তো আমরা ভোট দেব না। কারণ যুদ্ধ তো একা একা বাঁধে না। উসকানি তো কেউ না কেউ দিচ্ছে। দিয়ে তো বাঁধাল যুদ্ধটা। তাহলে একটা দেশকে নিন্দা করা হবে কেন? সেইজন্য আমরা ভোটদানে বিরত ছিলাম।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বাংলাদেশের পক্ষে রাশিয়ার অবদানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, যখন একটি দেশের বিরুদ্ধে প্রস্তাব- আমরা ভোট দিইনি। যখন মানবতার বিষয়টি সামনে এসেছে, আমরা ভোট দিয়েছি।
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘ বন্ধুত্বের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেন। বলেন, রাশিয়া আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সপ্তম নৌবহর পাঠিয়ে যখন পাকিস্তানের পক্ষে। রাশিয়া তখন আমাদের পক্ষে দাঁড়াল। কাজেই দুঃসময়ে যারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, আমরা নিশ্চয় তাদের পাশে থাকব। কিন্তু তারা যদি কোনো অন্যায় করে, নিশ্চয় সেটা আমরা মানব না।