দেশের সমুদ্র গবেষণায় পূর্ণাঙ্গ সক্ষমতা সৃষ্টির মাধ্যমে সুনীল অর্থনীতি উন্নয়নে সফলতা অর্জনে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
জানা গেছে, ‘বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (২য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ৪৪৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় অধীনস্থ কক্সবাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট।
সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া অর্থে প্রকল্পটি ২০২৪ সালের ৩০ জুন সময়ের মধ্যে শতভাগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের সমুদ্র গবেষণায় পূর্ণাঙ্গ সক্ষমতা সৃষ্টির মাধ্যমে সুনীল অর্থনীতি বা ব্লু ইকোনমির উন্নয়নে সফলতা অর্জন করাই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় জানানো হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় ৪২২টি গবেষণাগার সরঞ্জাম, একটি স্যাম্পল কালেক্টিং বোট (স্মল রিসার্চ ভেসেল) কেনা হবে। একটি ওশান অবজারভেশন সিস্টেম স্থাপন করা হবে। ট্রেনিং সেন্টার কাম হোস্টেল নির্মাণ করা হবে যার আয়তন হবে ৭ হাজার ৯২২ দশমিক ৯৮ বর্গমিটার ও ৬ তলা বিশিষ্ট। চার হাজার ৪২৪টি কম্পিউটার সফটওয়্যার, অফিস সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র কেনা হবে। ২০০ মিটার পন্টুনসহ জেটি ও গ্যাংওয়ে নির্মাণ করা হবে। এক হাজার ৩৬৫ দশমিক ৬৬ বর্গমিটার ওয়ার্কশপ কাম ট্রান্সপোর্ট পুল নির্মাণ করা হবে। ।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) তে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রকল্পটি ৬ এপ্রিল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকের সভায় অনুমোদন লাভ করেছে।
পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও উপকূলীয় পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত গবেষণা, অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদা পূরণে পেশা ও দক্ষতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, যার সঙ্গে প্রকল্পটি সংগতিপূর্ণ বলে মনে করে কমিশন।
একনেকের বৈঠকে উপস্থাপনের আগে পরিকল্পনা কমিশন তাদের মতামতে বলেছে, বঙ্গোপসাগরের অনাবিষ্কৃত সম্পদ অন্বেষণে গবেষণা, সমুদ্রের পরিবেশ সংরক্ষণ, সমুদ্র গবেষণায় দক্ষ জনশক্তি তৈরি, জনগণের মধ্যে সুনীল অর্থনীতি সম্পর্কিত ধারণা এবং বৈজ্ঞানিক মনোভাব সঞ্চার করার ক্ষেত্রে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমুদ্রসীমা বিজয়ের পরে এর ব্যবহার এবং এর সম্পদ রক্ষায় প্রকল্পটি দেশের অর্থনীতিতে বিস্তর ভূমিকা রাখবে। সেক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় একটি যুগোপযোগী প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যা একনেকের অনুমোদন পেয়েছে।