হাইপারসনিক বিমানের দৌড়ে চীন, দুই ঘণ্টায় সাংহাই থেকে নিউইয়র্ক পৌঁছানোর আশা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা অনেক কল্পকাহিনিকেও হার মানিয়েছে। শব্দের গতির চেয়েও এখন দ্রুত ছোটে বিমান। যেটিকে বলা হয়, সুপারসনিক বিমান। কিন্তু তাই বলে কি মাত্র দুই ঘণ্টায় চীনের সাংহাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছানো সম্ভব?

সিএনএন বলছে, বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, তাদের তৈরি হাইপারসনিক উড়োজাহাজে করে মাত্র দুই ঘণ্টায় ১১ হাজার ৮৫১ কিলোমিটার পাড়ি দেওয়া কোনো ব্যাপার নয়। সাধারণত এ দূরত্ব পাড়ি দিতে এখনকার দ্রুতগতির উড়োজাহাজগুলোর প্রায় ১৫ ঘণ্টা লেগে যায়।

universel cardiac hospital

বিবিসি বলছে, অনেকেরই হয়তো চোখ এড়ায়নি যে, পৃথিবীর প্রধান সামরিক শক্তিগুলো ইদানীং ঘন ঘন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, এমনকি উত্তর কোরিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ সম্প্রতি তাদের হাইপারসনিক অর্থাৎ শব্দের চেয়ে কয়েক গুণ দ্রুতগতিসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে।

চীনের লক্ষ্য হচ্ছে, ২০৫০ সাল নাগাদ তাদের সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক করে যুক্তরাষ্ট্রকে টক্কর দেওয়া। এ কারণেই দেশটি হাইপারসনিক প্রযুক্তির পেছনে বিপুল বিনিয়োগ করছে। গত বছরের শেষ দিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস নানা সূত্রের বরাত দিয়ে দাবি করে, পৃথিবীর কক্ষপথে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে চীন। এমন দাবি সরাসরি নাকচ করে দেয় চীনা কর্তৃপক্ষ। জানায়, তারা আদতে পুনরায় ব্যবহার করা যায়, এমন মহাকাশযানের পরীক্ষা চালিয়েছিল।

সিএনএন বলছে, বেইজিংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্পেস ট্রান্সপোর্টেশন (চীনা নাম লিংকং তিয়ানজিন) হাইপারসনিক মহাকাশযান তৈরির সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছে। তারা যাত্রীবাহী এমন একটি মহাকাশযান তৈরি করতে যাচ্ছে যা প্রতি সেকেন্ডে এক মাইলের বেশি পথ পাড়ি দিতে সক্ষম হবে। বর্তমানে সবচেয়ে দ্রুতগতির কনকর্ড বিমানের গতির চেয়ে তা প্রায় দ্বিগুণ গতিতে ছুটবে।

ইতিমধ্যে চীনের স্পেস ট্রান্সপোর্টেশনের পক্ষ থেকে প্রচারের জন্য একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তাদের যাত্রী বহনে সক্ষম হাইপারসনিক মহাকাশযান দেখানো হয়েছে। দ্রুতগতির মহাকাশযাত্রায় বড় সমস্যা যাত্রীদের সুরক্ষা। কিন্তু স্পেস ট্রান্সপোর্টেশন মহাকাশযানে যাত্রীদের কোনো হেলমেট বা মহাকাশে পরার উপযোগী বিশেষ পোশাক ছাড়াই সেখানে দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ, ভ্রমণ হবে আরামদায়ক। ওই মহাকাশযানে মোট ১২টি আসন দেখানো হয়েছে।

ডেলটা আকৃতির মহাকাশযানটির সঙ্গে যুক্ত দুটি বিশাল আকারের রকেট যুক্ত করে একে হাইপারসনিক মহাকাশযান হিসেবে দেখিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এটি মহাকাশের দিকে খাড়াভাবে উড়তে শুরু করে এবং নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছানোর পর তা থেকে রকেট আলাদা হয়ে যায়।

এরপর ঘণ্টায় ৭ হাজার কিলোমিটার গতিতে ছুটতে থাকে। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর বিশেষ ব্যবস্থায় আবার খাড়াভাবে অবতরণ করে এই যান।

শেয়ার করুন