ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় পূর্ব শত্রুতা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জের ধরে এক কৃষকলীগ নেতার স্ত্রী ও সন্তানকে পিটিয়ে ভিটেবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার অভিযোগ উঠেছে তাদের প্রতিবেশিদের বিরুদ্ধে। সেই সাথে তাদের ঘর দরজা ভেঙ্গে প্রতিবেশিরা বিক্রিও করে দিয়েছে- এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।
গত শুক্রবার কসবা উপজেলা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরবর্তী বাদৈর ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে গত ১৮ এপ্রিল রাতে কসবা থানায় মামলা রুজু হয়।
ভুক্তভোগীরা হলো- কৃষকলীগ নেতা সামসুল হক ভুইয়ার স্ত্রী জনারা বেগম (৫৫) ও তার শিশু পুত্র শাখায়েতুল (১০)। তারা কসবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কসবা থানায় দায়ের করা মামলার অভিযোগে জানা যায়, গত ৩১ জানুয়ারি বাদৈর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আবু জামাল খানের পক্ষে কৃষকলীগ নেতা শামসুল হক ভুইয়া নির্বাচন করেন। অন্যদিকে বর্ণি গ্রামের তার প্রতিবেশিরা বাদৈর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিপন আহম্মদ ভুইয়ার পক্ষে নির্বাচন করেন।
নির্বাচনে শিপন আহম্মেদ জয় লাভ করলে শামসুল হক ভুইয়া কোনঠাসা হয়ে গ্রাম ছাড়া হয়ে যান। তিনি গ্রাম থেকে দুই কিলোমিটার দুরে মূলগ্রাম ইউনিয়নের চারগাছ গ্রামে বাড়ি ভাড়া করে ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসবাস শুরু করেন।
জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল শুক্রবার শামসুল হকের স্ত্রী জনারা বেগম বর্ণি গ্রামে তাদের বাড়িতে গেলে প্রভাবশালী প্রতিবেশি কাহার মিয়া (৬৫) রুবেল মিয়া (৪০), মোজাম্মেল হক (৪০) কামরুল হাসান (৫০) তার উপর চড়াও হয়। এ সময় তার শিশু পুত্র শাখায়েতুলকেও (১০) মারধর করে একটি দাঁত ফেলে দেয়া হয়।
পরে তারা জনারা বেগমকে পিটিয়ে ও টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানি করেন। প্রাণ রক্ষা করতে গিয়ে জনারা বেগম পায়খানার ডোবায় পড়ে যান। পরে সেখান থেকে তিনি কোনো রকমে ওঠে দৌড়ে প্রাণ রক্ষা করেন বলে জানান ওই গ্রামের তিতন আলী, সবুজ মিয়া।
বাদৈর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মেহেদী হাসান সুমন জানান, প্রায় দুই বছর আগে প্রশাসন ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে শামসুল হক ভুইয়াকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে একটি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে। শামসুল হক ভুইয়া আদালত থেকে জামিন নিয়ে গ্রামে এসেছেন।
অভিযুক্ত কাহার মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শামসুল হক ভুইয়ার পরিবারের সদস্যদের হাতে তার ভাতিজা খুন হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সেই থেকে শামসুল হক এবং তার পরিবার গ্রামছাড়া। তবে তার বাড়ির লোকজন শামসুল হকের বাড়িঘর ভাংচুর করে বিক্রি এবং তার স্ত্রী-সন্তানকে মারধর করেছে- এমন অভিযোগ সত্য নয় বলেও তিনি দাবি করেন।
বাদৈর ইউপি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আবু জামাল খান বলেন, গত ৩১ জানুয়ারি ইউপি নির্বাচনে কৃষকলীগ নেতা শামসুল হক ভু’ইয়া আমার পক্ষে নির্বাচন করায় বিজয়ী চেয়ারম্যান শিপন আহাম্মদ ভু’ইয়ার সমর্থকরা তার ঘরবাড়ি ভেঙ্গে দেয়।