দেশে আসতে হলে অনলাইনে পূরণ করতে হবে হেলথ ডিক্লারেশন ফরম

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বাংলাদেশে আসার ক্ষেত্রে নতুন বিধিনিষেধ জারি করেছে। এখন থেকে বাংলাদেশ আসতে হলে অনলাইনে হেলথ ডিক্লারেশন ফরম পূরণ করতে হবে। বুধবার (২০ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে রাষ্ট্রীয় এই সংস্থাটি। একই সঙ্গে উড়োজাহাজে যাত্রী সংখ্যার ওপর বিধিনিষেধও শিথিল করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা জারি না করা পর্যন্ত এ নির্দেশনা কার্যকর থাকবে।

বাংলাদেশে এতদিন বিদেশ থেকে দেশে আসার পর বিমানবন্দর ও স্থল বন্দরে ইমিগ্রেশনের আগে যাত্রীদের পূরণ করতে হতো হেলথ ডিক্লারেশন ফরম। এতে বিমানবন্দরে এসে যাত্রীদের ফরম পূরণ করে জমা দিতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো। এই জটিলতা দূর করতে দেশে আসার তিন দিনের মধ্যে হেলথ ডিক্লারেশন ফরম পূরণ করার নিয়ম চালু করতে স্বাস্থ্য অধিদফতর সংশ্লিষ্ট বন্দর কর্তৃপক্ষগুলোকে চিঠি দেয়। স্বাস্থ্য অধিদফতর গত ৭ এপ্রিল বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে অনলাইনে হেলথ ডিক্লারেশন ফরম পূরণ সংক্রান্ত পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য।

২০ এপ্রিল বেবিচকের ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড রেগুলেশনস বিভাগের সদস্য চৌধুরী এম জিয়াউল কবির স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যাত্রীদের দেশে আসার তিন দিনের মধ্যে হেলথ ডিক্লারেশন ফরমপূরণ করতে হবে। http://healthdeclaration.dghs.gov.bd এ ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে ফরম পূরণ করতে হবে। ফরমটি পূরণ করার পর কিউআর কোড যুক্ত হেলথ কার্ড আসবে, সেটি প্রিন্ট করে কিংবা মোবাইলে সফট কপি নিজের কাছে রাখতে হবে। কোনও দেশে ট্রানজিট হয়ে বাংলাদেশে আসলে ট্রানজিট এয়ারপোর্টে চেক-ইন করার আগে নতুন করে পুনরায় হেলথ ডিক্লারেশন ফরম পূরণ করতে হবে। বোর্ডিংয়ের সময় এয়ারলাইন যাত্রীর হেলথ কার্ড আছে কিনা যাচাই করবে। দেশে আসার পর বিমানবন্দরে কিউআর কোড যুক্ত হেলথ কার্ড দেখাতে হবে যাত্রীকে।

অন্যদিকে করোনা পরীক্ষার বিধিনিষেধ আগের মতোই থাকছে। এর আগে ৮ মার্চ বিধিনিষেধ জারি করেছিল বেবিচক। বিধিনিষেধে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত যে কোনও টিকার পূর্ণ ডোজ যারা নিয়েছেন তাদের বাংলাদেশ আসতে করোনা পরীক্ষা করতে হবে না। যাত্রীদের ভ্যাকসিন গ্রহণের প্রমাণ সঙ্গে রাখতে হবে। আর যেসব যাত্রী এক ডোজ কিংবা কোনও ভ্যাকসিন নেননি, তাদের বাংলাদেশ আসতে হলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে। ১২ বছরের নিচে শিশুদের কোনও করোনা টেস্ট করাতে হবে না। তবে তাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অন্যান্য নির্দেশনাগুলো মানতে হবে।

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যেতে করোনা পরীক্ষারও বাধ্যবাধকতা থাকছে না। যাত্রীরা যে দেশে যাবেন, সে দেশের নির্দেশনা অনুসরণ করবেন।

বেবিচক জানিয়েছে, টিকা নেওয়া বা না নেওয়া কোনও যাত্রীর মধ্যে করোনার লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায় তাহলে বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য বিভাগ যাত্রীর করোনা টেস্ট করাবে। টেস্টে তার রিপোর্ট করোনা পজিটিভ আসলে তাকে নিজ খরচে সরকার নির্ধারিত হোটেলের সাত দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে। এরপর পুনরায় সাত দিন পর আবারও করোনা পরীক্ষা করা হবে।

এদিকে ফ্লাইটে যাত্রী বহনের সংখ্যার ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করেছে বেবিচক। নির্দেশনায় এয়ারলাইনগুলোকে বলা হয়েছে, ফ্লাইটে করোনা আক্রান্ত যাত্রী ধরা পড়লে আলাদা বসার জন্য ছোট আকারের উড়োজাহাজে শেষের রো-এর সব সিট খালি রাখতে হবে। আগে ৩০০ জন যাত্রী ধারণে সক্ষম উড়োজাহাজে ৯৫ শতাংশের বেশি যাত্রী না নেওয়ার বিধান ছিল। এখন বড় উড়োজাহাজেও ইকোনমেকি ক্লাসের শেষের রো-এর সব সিট খালি রাখতে হবে। বিজনেস ক্লাসে একটি সিট খালি রাখতে হবে।

শেয়ার করুন