প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য আবাসন নিশ্চিত করার সরকারের লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে ঈদুল ফিতরের আগেই ঈদ উপহার হিসেবে আগামীকাল মঙ্গলবার গৃহহীন পরিবারকে ৩২ হাজার ৯০৪টি বাড়ি দলিলসহ হস্তান্তর করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব (পিএমও) তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া রোববার পিএমওতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদেরকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাড়িগুলো হস্তান্তর অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফরিদপুরের নগরকান্দার পোড়াদিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, বরগুনা সদর উপজেলার খেজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিরাজগঞ্জ সদরের খোকশাবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারার হাজীগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্প হস্তান্তর অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত হবেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী এবং আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া জানান, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে আরও ৬৫ হাজার ৬৭৪টি একক ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। বাড়িগুলোকে আরও টেকসই ও জলবায়ু-সহনশীল করতে সরকার খরচ বাড়িয়েছে ও নকশায় পরিবর্তন এনেছে।
এখন ভূমিহীন ও গৃহহীনরা দুই দশমিক দুই শতাংশ জমিসহ উন্নত মানের আবাস পাবেন।
তিনি বলেন, বাড়িগুলোকে আরও টেকসই করার জন্য সরকার শক্তিশালী গ্রেট-বিম, লিন্টেল এবং রিইনফোর্সড কংক্রিট কলাম (আরসিসি) পিলার বিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করছে। প্রকল্পের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে মোট এক লাখ সতেরো হাজার ৩২৯টি একক বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। চলতি অর্থবছর ২০২১-২০২২ পর্যন্ত এক লাখ ৮৩ হাজারের বেশি বাড়ি বরাদ্দ করা হয়েছে।
তোফাজ্জেল হোসেন আরো জানান, তৃতীয় ধাপের আওতায় চরাঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে তৈরি প্রায় এক হাজার ২৪২টি বাড়ি বরাদ্দ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় বা বন্যার মতো যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিবেচনায় রেখে ঘরগুলো যাতে অন্য জায়গয় স্থানান্তর করা যায়, সেজন্য বিশেষ নকশা করা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, মোট ছয় হাজার ৮৯১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ক্রয়কৃত জমিতে গৃহ নির্মাণ করে পুনর্বাসন করা হবে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকার এসব প্রকল্পের জন্য বাড়ি নির্মাণের জন্য সারাদেশে অবৈধ দখল থেকে ৫৫১২.০৪ একর খাস জমি উদ্ধার করেছে।
জানা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ১৯৯৭ সাল থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত মোট সাত লাখ আট হাজারের বেশি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পুনর্বাসিত মানুষের সংখ্যা অন্তত ৩৫ লাখ ৪০ হাজার (আনুমানিক একটি পরিবারে পাঁচজন ব্যক্তি হিসাবে)।