ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। আবাহনী-শেখ জামালের ম্যাচে এসে সেটা যেন আরও একবার প্রমাণ হলো। ২৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর যখন একটি দল ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে, তখন তাদের পরাজয়ের পাল্লাটা থাকে বেশ ভারী। সেখান থেকে কেউ অতি মানবীয় ইনিংস খেলতে পারলেই কেবল রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে সেই অতিমানবীয় ইনিংসটি খেলেন কাজী নুরুল হাসান সোহান। ৮১ বলে অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংস খেলে আবাহনীর বিপক্ষে শেখ জামালকে এনে দিলেন ৪ উইকেটের অবিশ্বাস্য এক জয়।
শুধু জয়ই নয়, সেই সঙ্গে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে জিতিয়ে দিলেন এবারের প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট। এখন আর শেষ ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। এক ম্যাচ হাতে রেখেই চ্যাম্পিয়ন হলো ইমরুল কায়েসের শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক হিসেবে শিরোপা জয়ের পর শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে নেতৃত্ব দিয়ে ইমরুল কায়েস জিতেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ শিরোপা।
আবাহনীর বিপক্ষে এই জয়ে ইমরুল কায়েসের শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের পয়েন্ট হয়েছে ২৪। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হলো লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ১৪ রাাউন্ড শেষে তাদের পয়েন্ট ২০।
শেষ রাউন্ডে মুখোমুখি শেখ জামাল এবং লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ওই ম্যাচে লিজেন্ডসরা জিতলেও লাভ হবে না। তাদের পয়েন্ট হবে ২২। সুতরাং, আবাহীর বিপক্ষে ৪ উইকেটের এই জয় দিয়েই চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট পরে নিলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তবে ব্যাট করতে নামার পর শুরুতেই জিয়াউর রহমানের তোপের মুখে পড়ে আবাহনী।
৩৫ রানেই হারিয়ে ফেলে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে। ১৬ রান করেন মোহাম্মদ নাইম শেখ, ৪ রান করেন লিটন কুমার এবং নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হন ৮ রানে।
এরপর তৌহিদ হৃদয় আর আফিফ হাসান ধ্রুবর ব্যাটে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় আবাহনী। ৭৫ বলে ৫৩ রান করেন তৌহিদ হৃদয়। ৪৪ বলে ২৯ রান করেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত করেন ১২ রান। ৭ম উইকেট জুটিতে জাকের আলি অনিক এবং সাইফউদ্দিন মিলে গড়েন ৭৫ রানের জুটি। ৪৭ রানে জাকের আলি এবং ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন সাইফউদ্দিন।
জবাব দিতে নেমে শুরুর দিকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে শুরু করে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। ১৭ রানে সৈকত আলি, ১৫ রানে সাইফ হাসান, ১৫ রানে ইমরুল কায়েস, ১৬ রানে মুশফিকুর রহিম, ৩ রানে রবিউল হাসান রবি আউট হয়ে যান।
৭৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছে শেখ জামাল, তখন ঘুরে দাঁড়ান কাজী নুরুল হাসান সোহান এবং পারভেজ রাসুল। এ দু’জনের ৭২ রানের জুটি শেখ জামালকে অনেকটা দুর এগিয়ে দেয়। দলীয় ১৫০ রানে পড়ে শেখ জামালের ৬ষ্ঠ উইকেট।
এরপর জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বাকি পথ পাড়ি দেন সোহান। ৮২ রানের জুটি গড়েন এ দু’জন। ৮১ বলে ৮ বাউন্ডারি এবং ২ ছক্কায় ৮১ রানে অপরাজিত থাকেন সোহান এবং ২৬ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকেন জিয়াউর রহমান। ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে নুরুল হাসান সোহানের হাতে।