বর্ণিল আয়োজনে শ্রদ্ধা, ভালোবাসায় রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপন

মত ও পথ ডেস্ক

হৃদয় উৎসারিত আবেগ ও শ্রদ্ধায় বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে আজ ৮ মে, রোববার নোবেলজয়ী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের বাঙালি নাচ, গান, কবিতা, গীতিনাট্য ও কথামালার আয়োজনে স্মরণ করছেন বিশ্বকবিকে। তাঁর এবারের জন্মবার্ষিকী সরকার ‘মানবতার সংকট ও রবীন্দ্রনাথ’ প্রতিপাদ্যে উদযাপন করছে।

রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অন্যান্য বছরের মতো এবারও জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে সরকার। মূল অনুষ্ঠান ছিল রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিলাইদহের রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজিত জাতীয় পর্যায়ে বিশ্বকবির ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ। স্বাগত বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি সচিব আবুল মনসুর। স্মারক বক্তৃতা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বঙ্গবন্ধু চেয়ারের অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা।

শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশের সৌন্দর্য মুগ্ধ হয়েছেন। লিখেছেন- আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। যেটিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত করেন।

স্পিকার বলেন, বাঙালির আবেগ-অনুভূতি, সুখ-দুঃখ, প্রেম-বিরহ, আনন্দ-বেদনা প্রভৃতি স্থান খুঁজে পায় রবীন্দ্র লেখনীতে। সত্য ও সুন্দর সবসময় বিরাজ করে- রবীন্দ্রনাথ এটি ধারণ করতেন। তিনি এ সময় কবির লেখনী থেকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন প্রজন্মকে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগের আহবান জানান।

কে এম খালিদ বলেন, রবীন্দ্রনাথ মূলত পূর্ববঙ্গের। কারণ, পূর্ববঙ্গ বা বাংলাদেশে অবস্থান তাঁকে পরিপূর্ণ রবীন্দ্রনাথ করেছে। মাটি ও মানুষের সঙ্গে নিবিড় আত্মীয়তার বন্ধনে বেঁধেছে। এ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে কবির স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন স্থাপনা।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ বাংলা ও বাঙালির শৈল্পিক অহংকার। প্রতিভা ও শ্রমের যুগলবন্দি সম্মিলনে তিনি কবিতা-গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ-নিবন্ধ-নাটক-শিশুসাহিত্য-জীবনী-শিক্ষাভাবনা ইত্যাদি সব শাখায় সাফল্যের স্বর্ণশিখরে আরোহণ করেছেন। বাংলা সাহিত্যকে করেছেন ঐশ্বর্যমন্ডিত।

কবিগুরুর জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমি আজ থেকে তিনদিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কবির চিত্রশিল্প প্রদর্শনীসহ তাঁর উপর নির্মিত ডকুমেন্টারির মাসব্যাপী প্রচারের ব্যবস্থা করেছে। ঢাকাসহ কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, নওগাঁর পতিসর ও খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন করছে। রবীন্দ্রমেলা, আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

এ ছাড়াও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমি কবিগুরুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণিকা ও পোস্টার মুদ্রণ করেছে। বাংলা একাডেমিসহ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব দপ্তর ও সংস্থাগুলোয় এ উপলক্ষ্যে বিশেষ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

শেয়ার করুন