অভিবাসীদের মানবাধিকার ও সুরক্ষায় সংহতির আহ্বান বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম
সংগৃহীত ছবি

অভিবাসীদের মানবাধিকার ও সুরক্ষার ঘাটতি মেটাতে বিশ্বব্যাপী সংহতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার (১৮ মে) জাতিসংঘ সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অভিবাসন পর্যালোচনা ফোরামের (আইএমআরএফ) গোলটেবিল বৈঠক-৪-এ দেওয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, গোলটেবিল বৈঠকটিতে প্রতিমন্ত্রী প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। বৈশ্বিক অভিবাসন কমপ্যাক্টের পাঁচটি বিষয় যথাক্রমে— উপাত্ত, তথ্যের বিধান, নাজুকতা হ্রাস, বৈষম্য দূরীকরণ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর দৃষ্টিপাত করা হয় বৈঠকটিতে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংকটময় পরিস্থিতিতে আটকাপড়া অভিবাসীসহ অভিবাসীদের অভিবাসন যাত্রার ঝুঁকি ও নাজুকতা হ্রাস করার লক্ষ্যে সরকার, মানবাধিকার সংস্থা, কনস্যুলেট ও জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরো বেশি বৃদ্ধি করা এখন সময়ের দাবি।

স্বাগতিক দেশ ও মাতৃভূমির আর্থসামাজিক উন্নয়নে অভিবাসীদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বৈশ্বিক অভিবাসন কমপ্যাক্ট ও এজেন্ডা ২০৩০-এর সমন্বয়মূলক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন এবং এক্ষেত্রে অভিবাসনের সঙ্গে যুক্ত সব অংশীজন ও জাতিসংঘের অভিবাসন নেটওয়ার্কের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার আহ্বান জানান।

অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান বর্ণবাদ, জাতিগত বিদ্বেষ, ভুল তথ্য উপস্থাপন, কলঙ্কলেপন ও অসহিষ্ণুতা ইত্যাদি বিষয়গুলোতে আরো গভীরভাবে দৃষ্টি দেওয়ার ওপর জোর দেন প্রতিমন্ত্রী। অন্তর্ভুক্তিমূলক মূল্যবোধ ও সহিষ্ণুতার প্রচার এগিয়ে নিতে এবং অভিবাসন ও অভিবাসীদের সম্পর্কে জনসাধারণের কাছে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সহযোগিতার পাশাপাশি আরো বেশি বৈশ্বিক সহযোগিতারও আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে মঙ্গলবার (১৭ মে) আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। বৈঠকে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে অভিবাসনের বিভিন্ন দিক ও সম্ভাব্য সহযোগিতার নানা বিষয় নিয়ে আলোকপাত করা হয়।

উল্লেখ্য, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আন্তর্জাতিক অভিবাসন পর্যালোচনা ফোরামে (আইএমআরএফ) বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ফোরামটিতে যোগদান উপলক্ষে আগত একাধিক সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের প্রধানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। ২০২৩-২৫ মেয়াদে মানবাধিকার কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রার্থিতাসহ পারস্পরিক বিভিন্ন স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয় এসব বৈঠকে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক অগ্রগতি ঘোষণার মাধ্যমে শুক্রবার শেষ হবে চার দিনব্যাপী আইএমআরএফের সভা।

স্থায়ী মিশন জানায়, আইএমআরএফের অগ্রগতি ঘোষণার কো-ফ্যাসিলেটেড করার জন্য জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ও লুক্সেমবার্গের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত অলিভার মেইজকে মনোনয়ন দেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ শাহিদ।

জাতিসংঘ সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত এবারের আইএমআরএফের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন সংসদ সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহাইল ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।

শেয়ার করুন