ব্যক্তি নামে ৬০ বিঘার বেশি জমি থাকলে সরকার তা নিয়ে নেবে- এমন বিধান রেখে নতুন ‘ভূমি উন্নয়ন কর আইন, ২০২২’ ও ‘ভূমি সংস্কার আইন, ২০২২’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
ভূমি উন্নয়ন কর আইনের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘একজনের নামে ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি থাকলে সরকার তা নিয়ে নেবে।’
তবে ভূমি সংস্কার আইনের খসড়ার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি একজনের নামে রাখা না গেলে রপ্তানিমূলক কৃষিপণ্য বা অন্য কোনো প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প হয়, তবে সেক্ষেত্রে ৬০ বিঘার বেশি জমি রাখা যাবে।’
ভূমি উন্নয়ন করের আইনের খসড়া নিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আগের একটি অধ্যাদেশকে পরিমার্জন করে নতুন আইন করা হচ্ছে। নতুন আইন পাস হলে কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি ও পরিবারভিত্তিক কৃষিজমির পরিমাণ ৮ দশমিক ২৫ একর বা ২৫ বিঘা পর্যন্ত ট্যাক্স দিতে হবে না। তবে জমি ২৫ বিঘার ওপরে থাকলে সব জমির জন্য ট্যাক্স দিতে হবে। তিন বছর ভূমি উন্নয়ন কর না দিলে ৬ দশমিক ২ শতাংশ হারে জরিমানা করে আদায় করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি কবরস্থান, শ্মশান, মসজিদ, ঈদগাহ মাঠ, মন্দির, গির্জা বা সব সাধারণের প্রার্থনার স্থানকে ভূমি উন্নয়ন করের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কবরস্থানকে ট্যাক্স দিতে হবে। কারণ পারিবারিক কবরস্থানের রেকর্ড ব্যক্তিনামে থাকে। এলাকাবাসী মিলে মসজিদের পাশে যে কবরস্থান করে, সেটি মসজিদের নামে হওয়ায় সেটির কর দিতে হবে না।’
ভূমি সংস্কার আইনের খসড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পল্লি এলাকায় বাস্তুভিটা হিসেবে ব্যবহারের জন্য কোনো খাস জমি পাওয়া গেলে সরকার ভূমিহীন, মুক্তিযোদ্ধা বা তার পরিবার, ভূমিহীন কৃষিক ও তাদের পরিবারকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে লিজ দেবে। তবে কাউকে পাঁচ শতাংশের বেশি লিজ দেওয়া যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘এই আইন পাস হলে পাঁচ বছরের চুক্তি করে জমি বর্গা দিতে হবে। বর্গাদার মারা গেলে তার ওয়ারিশদারের ওপর বর্গার চুক্তি বর্তাবে।’
এ আইনের আদেশ লঙ্ঘন করলে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হবে হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।