আজ আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ ২৯ মে, রোববার আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন হবে দিবসটি। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়া বিশ্বের সব দেশের শান্তিরক্ষীর অসামান্য অবদান এ দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়ে থাকে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।

দিবসটি পালনে রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ। আজ সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণের মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হবে। সকাল ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদ শান্তিরক্ষীদের আত্মীয় ও আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়েছে।

universel cardiac hospital

এ অনুষ্ঠানে টিভিসির মাধ্যমে যুক্ত হবেন প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, তিন বাহিনীর প্রধান, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সামরিক উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তা, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ উর্ধতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শান্তিরক্ষী দিবসের শুরুতে সকালে অনুষ্ঠিত হবে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়-২০২২’। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ জার্নাল ও জাতীয় পত্রিকাগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে। বিটিভি, বেতারসহ বেসরকারি চ্যানেলে আজ নানা অনুষ্ঠান প্রচার হবে। শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকাররি টেলিভিশনে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার (ইউএনপিএসও) সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। বিশ্ব শান্তিরক্ষায় ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে বিশ্বে শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিত। ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে।

নিরাপত্তার কারণে বিভিন্ন মিশনে কাজ অসমাপ্ত রেখে জাতিসংঘ বাহিনী ফিরে এসেছে। একমাত্র বাংলাদেশিরাই হচ্ছেন এর ব্যতিক্রম। সিয়েরা লিয়নে আজ বাংলাকে দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। রাস্তাঘাটের নামকরণ করা হয়েছে বাংলাদেশের নামে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাস, সংঘাত ও দাঙ্গা দমন করে শান্তি স্থাপন, তথা সেসব দেশ পুনর্গঠনে এ দেশের শান্তিসেনারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এসব কারণে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সেনা ও পুলিশ বাহিনী সাফল্যের শীর্ষে অবস্থান করছে।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের এক লাখ ৮০ হাজার ৬৬১ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘের ৫৪টি শান্তি রক্ষা মিশনে অংশ নিয়েছেন। বর্তমানে ৯টি মিশনে নিয়োজিত রয়েছেন ছয় হাজার ৮০২ জন। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় এ পর্যন্ত শহীদ হয়েছেন ১৬০ জন আর আহত হয়েছেন ২৪০ জন। শান্তিরক্ষী মিশনে বর্তমানে ৩৮৭ জন নারী শান্তিরক্ষী রয়েছেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে আকর্ষণীয় শান্তিরক্ষার দায়িত্ব ব্যাপক জনপ্রিয়। কারণ, এতে অংশগ্রহণকারীদেরকে মিশনের পর বাড়ি কেনার ও অবসরের জন্য সঞ্চয়ের সুযোগ করে দেয়। সামরিক বাহিনীতে কর্মরতরা এই মিশনে যাবার জন্য অপেক্ষা করেন।

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ভূমিকায় প্রশংসিত হয়ে সিয়েরা লিওন তাদের দেশের প্রধান ভাষা বাংলা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সংবিধান অনুযায়ী করতে না পারায় দেশটির দ্বিতীয় ভাষা এখন বাংলা।

শেয়ার করুন