সিপিবি নেতারা বলেছেন, দেশে গ্রাম থেকে শহর—সব জায়গায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। মানুষের ভোটাধিকার নেই। ভয়ের পরিবেশ চলছে। সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে দুঃশাসন হটাতে হবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার পুরানা পল্টন মোড়ে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
‘দাম কমাও, জান বাঁচাও, ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া’র দাবিতে সিপিবির দেশব্যাপী দাবিপক্ষের শেষ দিনে আজ বিকেল চারটায় ঢাকায় ওই সমাবেশ হয়।
সমাবেশে সিপিবির নেতারা বলেন, সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির জন্য চলমান দুঃশাসন হটাতে হবে ও ব্যবস্থা বদল করতে হবে। বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তিই পারবে এই ব্যবস্থা বদল করতে। এলাকায় এলাকায় প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তুলে ভাত ও ভোটের অধিকার রক্ষার আহ্বান জানান তাঁরা।
এ সময় শাসকশ্রেণির রাজনৈতিক দলগুলোর গালভরা বুলির ফাঁদে পা না দিয়ে নীতিনিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের শক্তি-সমাবেশ বাড়ানোর আহ্বান জানান তাঁরা। সিপিবি নেতারা বলেন, সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। মানুষ এখন কম খেয়ে বেঁচে আছে। এই অবস্থায় উন্নয়ন আর গণতন্ত্রের বুলি হাস্যকর।
ভোজ্যতেলের মতো ধানের ব্যবসাও বড় বড় করপোরেট গ্রুপ, দালাল আর মজুতদারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবি নেতারা। তাঁরা বলেন, কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা, উৎপাদক সমবায় ও ক্রেতা সমবায় প্রতিষ্ঠা করা এবং কঠোর হাতে অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ না করলে এই পরিস্থিতি পাল্টানো যাবে না।
স্বল্প আয়ের মানুষের দুর্দশা লাঘবে সারা দেশে রেশন ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালুর দাবি জানান সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স)।
তিনি বলেন, এর আগে ফ্যামিলি কার্ডের সংখ্যা ও পণ্য বাড়ানো এবং ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তা সরবরাহ করতে হবে।
বক্তব্যে আগামী নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া ও সরকারের পদত্যাগের দাবি জানান সিপিবির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, নির্বাচনব্যবস্থার সংস্কারে কাজ না করে লোকদেখানো সংলাপ ও ইভিএম বিতর্ক সামনে আনছে নির্বাচন কমিশন।
ভোটকেন্দ্রে মানুষ নির্ভয়ে ইভিএম মেশিন ব্যবহার করতে পারবেন, সে বিশ্বাসযোগ্যতা এখনো পায়নি। তাই এ নিয়ে টাকা খরচ ও অহেতুক বিতর্কের প্রয়োজন নেই।
সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুজাহিদ ইসলাম সেলিম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাজেদুল হক (রুবেল), হাফিজুল ইসলাম, জলি তালুকদার ও আবিদ হোসেন।