পরিবেশ দূষণজনিত অসুস্থতায় বাংলাদেশে বছরে খরচ হয় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। ‘পরিবেশদূষণ ও সুরক্ষাবিষয়ক তারুণ্য জরিপ-২০২২’ এ উঠে এসেছে এসব তথ্য। গবেষণা ও পরামর্শ সেবা প্রতিষ্ঠান ‘চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ’ এই জরিপ করে।
শনিবার (৪ জুন) রাজধানীর বনানীতে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয় প্রতিবেদনের তথ্য।
জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং পানিবাহিত রোগকে পরিবেশ দূষণজনিত অসুস্থতার কারণ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এই দূষণে প্রতি পরিবারের বছরে গড়ে চিকিৎসা বাবদ ব্যয় হয় ১০ হাজার ৫৮৭ টাকা করে। দূষণের অসুস্থতায় বছরে কর্মহীন কাটাতে হয় ১৭ দিন করে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শনিবার অনুষ্ঠিত আয়োজনে প্রধান বক্তা ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর তিনি বলেন, নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে পরিবেশের টেকসই কাঠামো ভেঙে ফেলতে এতটুকু দ্বিধা করছে না মানুষ। বায়ুদূষণই প্রধান দূষণ। কেননা, প্রতি মুহূর্তেই শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে হয়। তাই দূষণের কারণগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের বিকল্প নেই।
চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন খান বলেন, তরুণদের নেতৃত্বে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণই এর সবচেয়ে ভালো সমাধান। পরিবেশ সুরক্ষায় সবুজ উদ্যোক্তা তৈরির বিকল্প নেই।
এই জরিপে অংশ নিয়েছে ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ১ হাজার ২৩ জন। তাঁরা প্রত্যেকেই জানান, গড়ে প্রতিদিন অন্তত একটি করে প্লাস্টিকের ব্যাগ তাঁরা ব্যবহার করে থাকেন। ফলে শুধু তরুণেরাই বাংলাদেশে বছরে ১ হাজার ৮৭০ কোটি পিস পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করেন। কলকারখানা, যানবাহনের ধোঁয়ার সঙ্গে আছে নগরায়ণের বিরূপ প্রভাব। এসবই মারাত্মকভাবে প্রতি মুহূর্তে ধ্বংস করছে চারপাশের সবুজের বেষ্টনী। এর মধ্যে একটি গুরুতর কারণ প্লাস্টিকের ব্যবহার। পরিবেশ রক্ষায় বাইসাইকেলের ব্যবহার বাড়ানোর সুপারিশ করেছে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ। অনুষ্ঠান থেকে পরিবেশ রক্ষায় ১০ দফা সুপারিশের প্রস্তাব করা হয়।
সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে শুরু হয় বাইসাইকেল র্যালি। সব বয়সের অর্ধশতাধিক মানুষ এই র্যালিতে অংশ নিয়ে রাজধানীর সড়কে বাইসাইকেল চালান। আয়োজকেরা বলেন, দেশকে পরিবেশ দূষণের ক্ষতি থেকে বাঁচাতে হলে সরকারের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের এই আয়োজনে সঙ্গে ছিল সমমনা আরও সাতটি প্রতিষ্ঠান।