আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বিশ্বের অনেক ভাষায় গাওয়া হয় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি। এই গানের মাধ্যমে পুরো বিশ্বের কাছে পৌঁছে গেছেন সদ্য প্রয়াত সাংবাদিক, কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী।
আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত নাগরিক শোকসভায় এসব মন্তব্য করেন বক্তারা। এ সময় রাজধানীতে গাফ্ফার চৌধুরীর নামে সড়কের নামকরণের দাবি জানানো হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বলেন, গাফ্ফার চৌধুরী জনগণের জয়গান গেয়েছেন সারা জীবন। মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে গেলে তাঁর গানের কাছে আমাদের চিরকাল আশ্রয় নিতে হবে।
শোকসভায় গাফ্ফার চৌধুরীর ছোট বোন নেছা চৌধুরী জানান, ভাইকে দেশে এনে দাফনের ব্যবস্থা করায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।
একটি ভালো সম্পাদনা পরিষদ পেলে আগামী বইমেলায় বাংলা একাডেমি গাফ্ফার চৌধুরী রচনাবলীর প্রথম খণ্ড প্রকাশের কথা জানান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা।
এ সময় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, গাফ্ফার চৌধুরীও সাংবাদিকতা পেশায় ছিলেন বলে সাংবাদিক হিসেবে আমাদের গর্ব হয়। জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে কীর্তিমান এ মানুষটির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন সম্ভব হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা।
আলোচনার একপর্যায়ে গাফ্ফার চৌধুরী রচিত অমর একুশের কবিতা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ আবৃত্তি করেন মিরপুর বাংলা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শোকসভায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক বাঙালি, তাই গাফ্ফার চৌধুরীর মৃত্যু নেই।
গাফ্ফার চৌধুরীর স্মৃতি রক্ষার দাবি জানান আয়োজনের সভাপত বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্মৃতি পরিষদের সদস্যসচিব সিরাজ উদ্দীন আহমেদ।
সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক নিম চন্দ্র ভৌমিক, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শফিউর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
১৯৩৪ সালে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মৃতি নিয়ে তরুণ বয়সেই লিখেছিলেন, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফ্রেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।’ গত ১৯ মে ৮৭ বছর বয়সে মারা যান গাফ্ফার চৌধুরী।